মা হচ্ছে সুন্দরবনের বাঘশাবক সেই যূথী। ঢাকা চিড়িয়াখানায় নতুন অতিথির আগমনের খবরে বইছে আনন্দের বন্যা। ২০১২ সালের ১২ জুন রাজধানীর শ্যামলীর একটি বাসা থেকে সুন্দরবন থেকে পাচার হওয়া জয়, যূথী ও জ্যোতি নামের তিন বাঘশাবক উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর আদালতের নির্দেশে রাজধানীর ২২/২ হাতিরপুলের ফিকামলি সেন্টারের মালিক ও বাঘবিশেষজ্ঞ ড. আবদুল ওয়াদুদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। এখানে কয়েক দিন থাকার পর কক্সবাজারের ডুলাহাজারায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক মাস আগে যূথীকে ঢাকা চিড়িয়াখানায় আনা হয়। এখানে আসার পর অন্য একটি বাঘের সঙ্গে যূথীকে একই খাঁচায় রাখা হয়। এরপর গর্ভধারণ করে যূথী। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, বাঘবিশেষজ্ঞ ড. আবদুল ওয়াদুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের শাবক যূথীকে এখন আলাদাভাবে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার। নইলে অঘটন ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কয়েক দিন আগে তার গর্ভধারণের বিষয়টি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবন অঞ্চলে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বসবাস। বাঘের আটটি গোত্রের মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বিশেষ স্বাতন্ত্র্যের অধিকারী। গায়ে হলুদের ওপর ডোরা কাটা কালো দাগ এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য। পুরুষ বাঘের দৈর্ঘ্য ৩ মিটার আর স্ত্রী বাঘের আড়াই মিটার। এদের গড় ওজন ১৮০ থেকে ২৪০ কেজি হয়। শরীর সুগঠিত ও শক্তিশালী। এরা মাংসাশী এবং ভয়ানক হিংস । ভালো সাঁতার কাটতে পারে। রয়েল বেঙ্গল টাইগার উভচর প্রাণীর মতো জীবনযাপন করে। বন্যপ্রাণী হরিণ, মহিষ, বনগরু, নীল গাই, শজারু, হাতি, এমনকি মাছ পর্যন্ত শিকার করে। এ প্রাণী সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত শিকারে ব্যস্ত থাকে। সাড়ে তিন বছর থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বয়ঃপ্রাপ্ত হয়। গর্ভধারণের ১৫-১৬ সপ্তাহ পর দুই থেকে চারটি বাচ্চা দেয়। গড়ে এ প্রাণী ১৫-২০ বছর বাঁচে। বাঘ এখন বাংলাদেশের একটি অতি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী।