বুধবার, ১৫ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা
ড্যান্ডি ডায়িং ঋণ মামলা

আদালতে জবাব দিলেন খালেদা

ড্যান্ডি ডায়িংয়ের ঋণখেলাপি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জবাব দাখিল করা হয়েছে। গতকাল ঢাকার প্রথম অর্থঋণ আদালতে তার আইনজীবী দেওয়ান হুমায়ুন কবির রিপনের মাধ্যমে তিনি লিখিত এ জবাব দাখিল করেন। জবাবে বলা হয়েছে, বাদী ব্যাংকের আরজি ও এক নম্বর বিবাদী কোম্পানির বিভিন্ন দালিলিক মতে ১৩ কোটি ১৪ লাখ এবং ক্যাশ ক্রেডিট (সিসি) লোন বাবদ ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণের পরে ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। এক নম্বর বিবাদী কোম্পানীর উত্তোলনকৃত ঋণ পরিশোধ করা সত্ত্বেও সে তথ্য গোপন করে সোনালী ব্যাংক কথিত কল্পিত পাওনা উল্লেখ করে এক নম্বর বিবাদী ড্যান্ডি ডায়িং লিমিটেডসহ মোট ১১ জনকে বিবাদী করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ মোকদ্দমা দায়ের করেন। এ ছাড়া বাদীর স্বীকৃতমতে কথিত ঋণ মঞ্জুর সম্পর্কে জবাবদানকারী বিবাদী কখনই বিন্দুমাত্র জ্ঞান, ধারণা বা কোনোরূপ সংশ্লিষ্টতা ছিল না। এ ছাড়া কোম্পানির যাবতীয় ব্যবসায়ী লেনদেন, কায়কারবার, দেনা-পাওনা ও হিসাব-নিকাশে কোনো প্রকার যোগসূত্রতা নেই। জবাবদানকারী বিবাদী কোম্পানি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য নন এবং কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে কখনো জড়িত ছিলেন না কিংবা বর্তমানেও নেই। বাদী ব্যাংক এ বিষয়ে জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ অন্যায়, বেআইনি ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ওই জবাবদানকারী বিবাদীকে হেয় প্রতিপন্ন করার অসদুদ্দেশ্যে এ মামলায় পক্ষভুক্ত করেছে। এর আগে বিবাদীপক্ষে জবাব দাখিল করার জন্য আদালতে সময় চান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। তার আগে খালেদা জিয়াকে জবাব দাখিলের জন্য পত্রিকার মাধ্যমে বিকল্প সমন জারি করেন আদালত। এর আগে এ মামলার বিবাদী আরাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ায় ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক অংশীদারিত্ব কারণে তার মা খালেদা জিয়া, স্ত্রী শর্মিলা রহমান এবং দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানকে বিবাদী করা হয়। তবে উত্তরাধিকারী হওয়া সত্ত্বেও তারেক রহমান আগে থেকেই বিবাদী থাকায় নতুন করে তাকে বিবাদীভুক্ত করার আবেদন করা হয়নি। এর আগে ড্যান্ডি ডায়িং মামলার ১০ নম্বর বিবাদী মোজাফফর আহমেদ মারা গেলে তার স্ত্রী শামসুন্নাহার ও ছেলে মাসুদ হাসানকে বিবাদী করেছিল সোনালী ব্যাংক। মামলার অন্য বিবাদীরা হলেন ড্যান্ডি ডায়িং লিমিটেড, খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদার ভাই প্রয়াত সাঈদ এস্কান্দারের ছেলে শামস এস্কান্দার, সাফিন এস্কান্দার, মেয়ে সুমাইয়া এস্কান্দার, স্ত্রী নাসরিন আহমেদ, তারেক রহমানের বন্ধু ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, মামুনের স্ত্রী শাহিনা বেগম ও গাজী গালিব আহম্মেদ। এর আগে গত বছরের ২ অক্টোবর ৪৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ফেরত চেয়ে সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখার নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম এ মামলা করেন। মামলায় বলা হয়, ১৯৯২ সালে ৩ কোটি টাকা মূলধন নিয়ে যাত্রা শুরু করে ড্যান্ডি ডায়িং। ১৯৯৩ সালের ৫ মে সোনালী ব্যাংক থেকে ১৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করে। এরপর ১৯৯৬ সালে সাঈদ এস্কান্দারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পুনরায় ঋণ মঞ্জুর করেন। ২০১০ সালের ৪ এপ্রিল ড্যান্ডি ডায়িংকে দেওয়া ঋণের পরিমাণ ৪২ কোটি ৬৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। মামলায় আরও বলা হয়, ঋণ গ্রহণের প্রথম থেকেই প্রতিষ্ঠানটি খেলাপি হয়ে পড়ে। এরপর সোনালী ব্যাংক থেকে বিবাদী প্রতিষ্ঠানকে কিস্তি পরিশোধের জন্য বার বার তাগাদা দিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এর আগে ২০০১ সালে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটির ১২ কোটি ১৬ লাখ টাকার সমপরিমাণ ঋণের সুদ মওকুফ করে। মামলায় আরও বলা হয়, বিবাদীদের সোনালী ব্যাংক থেকে একাধিকবার ঋণ পরিশোধের জন্য নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু বিবাদী প্রতিষ্ঠান ঋণ পরিশোধের বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তাই ঋণের টাকা আদায়ের জন্য আদালতে এ মামলা করা হয়।

সর্বশেষ খবর