সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

মেয়াদহীন কমিটির রাজনীতি গাজীপুরে

ফাঁকা মাঠে সক্রিয় আওয়ামী লীগ

গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে এক যুগ আগে। ৭১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির চারজন সহ-সভাপতি ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনজন সহ-সভাপতি বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ বলে জানা গেছে। এ পরিস্থিতিতে শিগগিরই সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করার দাবি তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। বিগত নির্বাচনে জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গাজীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হককে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এবং গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকিকে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। পাঁচটি উপজেলার মধ্যে তিনটি আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান, অন্যরা বিএনপি সমর্থিত। তিনটি পৌরসভার মধ্যে একটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত এবং বাকি দুটিতে বিএনপি সমর্থিত মেয়র রয়েছেন। একমাত্র সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর কাছে হেরে যান। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সর্বদা মাঠে ছিলেন ঐক্যবদ্ধ। ২০০৩ সালের ২৯ জুন শহরের রাজবাড়ী মাঠে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল। কাউন্সিলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক ও সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুনরায় নির্বাচিত হন। দীর্ঘদিন পার হয়ে গেলেও জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি হয়নি। নেতা-কর্মীদের দাবি, জেলা আওয়ামী লীগের আগামী কমিটি নতুন-পুরনোর সমন্বয়ে হলে দলকে চাঙ্গা করা সম্ভব হবে। ২০১৩ সালে ৬ জুলাই নবগঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নানের কাছে পরাজিত হন। দলীয় নেতা-কর্মীরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেননি বলে নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ ছিল বলে অনেকে মনে করেন। গাজীপুর মহানগর গঠিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের একই মর্যাদায় আরেকটি ইউনিট সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার মর্যাদাসম্পন্ন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ পদে নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সভাপতি হয়েছেন অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন মো. জাহাঙ্গীর আলম। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন। বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ কর্মকর্তা মহানগরের অধিবাসী। ফলে মহানগরের বাইরের ইউনিটগুলোর কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে। জেলা যুবলীগও দীর্ঘদিন আগে হওয়া কমিটি দিয়ে চলছে। সম্প্রতি কেন্দ্র থেকে গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ তিনটি পদের নাম দিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আটটি পদের নাম দিয়ে ২০১৩ সালের ১১ অক্টোবর গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি গঠিত হয়। কয়েক মাস আগে মহানগর ছাত্রলীগের ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়। জেলা এবং মহানগর কৃষক লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগও চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে।
জেলা আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গাজীপুরে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সব সময়ই ঐক্যবদ্ধ। দীর্ঘদিন ধরে জেলা কমিটি না হলেও আগের কমিটির মাধ্যমেই সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। কাপাসিয়া, কালীগঞ্জ, শ্রীপুর উপজেলা, শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষ হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করা হবে।

সর্বশেষ খবর