শিরোনাম
সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

নানামুখী চাপে গৃহবন্দী বিএনপি

গাজীপুর বিএনপিতে এখন দুর্দিন বিরাজ করছে। মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে জর্জরিত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা মাঠে না থেকে কার্যত গৃহবন্দী। কেউ কেউ চলে গেছেন আত্মগোপনে।
১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের চারটি আসনের মধ্যে দুটিতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এবং বাকি দুটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে সবকটি আসনেই আওয়ামী প্রার্থীরা জয়ী হন। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চারটি আসনের মধ্যে মাত্র একটি আসনে বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হন, বাকি তিনটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভ করেন। ২০০৮ ও ২০১৩ সালের নির্বাচনে পাঁচটি আসনের সবকটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা জয়ী হন। ২০১১ সালের ২৩ জুন এ কে এম ফজলুল হক মিলনকে সভাপতি ও কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুলকে সাধারণ সম্পাদক করে গাজীপুর জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়। আগে দলে গ্রুপিং থাকলেও জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের পর দলীয় কার্যক্রম ঐক্যবদ্ধভাবে পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের কারণে নবগঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে বিজয়ী হন। মান্নান-হাসান উদ্দীন সরকার দ্বন্দ্বের কথা সর্বত্র প্রচারিত থাকলেও দল তা স্বীকার করে না। তবে মহানগর বিএনপির কমিটি হয়নি। এ ছাড়া ১৪ বছর আগে গঠিত হয়েছিল জেলা ছাত্রদল ও যুবদলের কমিটি। আন্দোলনের প্রাণ ছাত্রদল-যুবদলের নতুন কমিটি না হওয়ায় তরুণ নেতৃত্ব আসতে পারছে না। সরাফত হোসেন ছাত্রদলের সভাপতির পাশাপাশি বর্তমানে জেলা বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক পদে রয়েছেন। এ ছাড়া হান্নান মিয়া হান্নু জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদের পাশাপাশি জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং গত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। এদিকে গত ৫ জানুয়ারির পর হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সহস্রাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় কমপক্ষে ২৫টি মামলা রয়েছে। পুলিশের গ্রেফতার আতঙ্কে তারা অনেকে এখন ঘরছাড়া, আবার কেউ অনেকটা আত্মগোপনে রয়েছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন ও সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল বেশির ভাগ সময় রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করেন। গাজীপুর শহরের দলীয় কার্যালয়ে কয়েকজন নেতা-কর্মীকে মাঝে-মধ্যে অবস্থান করতে দেখা যায়। বর্তমানে প্রায় সময়ই দলীয় কার্যালয় ফাঁকা থাকে। বিএনপি কার্যালয়ের আশপাশে প্রায় সময়ই পুলিশের অবস্থান দেখা গেছে। জেলা বিএনপির পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী কমিটিগুলো নতুন করে গঠনের দাবি তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের। এত কিছুর পরও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গত ২৭ ডিসেম্বর ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠের জনসভাকে ঘিরে দলীয় নেতা-কর্মীরা আগের তুলনায় তৎপর ছিলেন। এ ছাড়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিএনপি সমর্থিত একাধিক কাউন্সিলর ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। জেলার অন্যান্য এলাকার অনেক নেতা-কর্মী আঁতাত করে চলছেন।

সর্বশেষ খবর