সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

ভারতের কয়লা আমদানি নিয়ে ফের জটিলতা

ভারতের মেঘালয় থেকে কয়লা রপ্তানির ওপর দেশটির আদালত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিলেও সিলেটের কোনো শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি হচ্ছে না। ভারত সরকার মেঘালয়ের রপ্তানিকারকদের ওপর থেকে ‘আদিবাসী সুবিধা’ প্রত্যাহার করে কয়লার ওপর রাজস্ব আরোপ করায় জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। রাজস্ব আরোপের কারণে কয়লার দাম প্রতি টনে বেড়ে গেছে ১৫ ডলার। এতে বাংলাদেশি আমদানিকারকরা বাড়তি মূল্যে ভারতের মেঘালয় থেকে কয়লা আমদানি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। আমদানিকারকদের দাবি ভারতের নির্ধারিত দামে কয়লা আমদানি করলে দেশের অভ্যন্তরে এর দাম বেড়ে যাবে। তাই তারা দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার কয়লা দিয়ে দেশের চাহিদা পূরণের চিন্তাভাবনা করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে প্রতিবছর কয়লার চাহিদা প্রায় ৪০ লাখ টন। এর মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ২১ লাখ টন কয়লা আমদানি হয়ে থাকে। অবশিষ্ট চাহিদার ১৫-১৬ টন কয়লা উত্তোলিত হয় বাংলাদেশের বড়পুকুরিয়া খনি থেকে। বাকি চাহিদা পূরণ হয় গাছ পুড়িয়ে।
সূত্র জানায়, কয়েক বছর ধরে ভারতের মেঘালয় থেকে প্রতিটন কয়লা আমদানি হতো ৮৫ ডলারে। মেঘালয়ের রপ্তানিকারকরা আদিবাসী হিসেবে এতদিন কয়লা রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা ভোগ করতেন। কিন্তু সম্প্রতি ভারত সরকার এ সুবিধা প্রত্যাহার করে রপ্তানিকৃত কয়লার উপর রাজস্ব আরোপ করে। এতে রপ্তানিকারকরা কয়লার মূল্য টন প্রতি ১৫ ডলার বাড়িয়ে দিলে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা আমদানিতে অনাগ্রহ দেখান। ফলে সিলেটের শুল্ক স্টেশনগুলো দিয়ে কয়লা আমদানি বন্ধ হয়ে পড়ে। আমদানিকারকরা জানান, ভারতের মেঘালয়ের কয়লার মান ভালো। কিন্তু টন প্রতি ১৫ ডলার মূল্য বাড়ানোর কারণে আমদানি সম্ভব হচ্ছে না। তাই দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানি করা হচ্ছে। এই তিন দেশ থেকে কয়লা আমদানিতে টন প্রতি খরচ পড়ে (চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত) ৭৫-৮০ ডলার। সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি ফালাহউদ্দিন আলী আহমদ জানান, ভারতে আরোপিত রাজস্ব প্রত্যাহারের জন্য সে দেশের রপ্তানিকারকরা সরকারের সঙ্গে দেনদরবার করছেন। মেঘালয়ের কয়লার মান ভালো হলেও প্রতি টন কয়লা ১০০ ডলার দিয়ে আমদানি করা সম্ভব নয়। এর চেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা আমদানি করে কমমূল্যে দেশের চাহিদা পূরণ করা হবে।
 প্রসঙ্গত, মূল্য বৃদ্ধি, শুল্ক স্টেশনে পরিমাপক যন্ত্র না থাকা ও পরিবেশ আদালতে মামলার কারণে গত একবছরের বেশি সময় ধরে ভারতের মেঘালয় থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে। ফলে গত ইট পুড়ানোর মৌসুমে কয়লার দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়।

সর্বশেষ খবর