বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সাকার রায় ইস্যুতে চট্টগ্রাম বিএনপিতে গৃহবিবাদ

রিয়াজ হায়দার, চট্টগ্রাম

সাকার রায় ইস্যুতে চট্টগ্রাম বিএনপিতে গৃহবিবাদ

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ইস্যুতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসির রায় বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ঘিরে গৃহবিবাদ চরমে উঠেছে বিএনপির। সাকার জন্মস্থান চট্টগ্রামে স্পষ্ট বিভক্তি দেখা দিয়েছে দলটিতে। সাকার ছোটভাই ও বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক গিয়াস কাদের (গিকা) চৌধুরীর নেতৃত্বে পৃথক একটি গ্রুপ মাঠে নামার প্রস্তুতি নিয়েছে। তারা এ লক্ষ্যে খোদ আহ্বায়ককে বাদ দিয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সভা করায় দলটিতে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। দলের অভ্যন্তরেই শুরু হয়েছে নানামুখী গুঞ্জন। প্রশ্ন উঠেছে সমালোচকদের মনে, তবে কি সাকার ফাঁসির রায় কার্যকর হলে অস্থিরতা সৃষ্টি বা অঘটন ঘটাতেই চলছে দলীয় একাংশের প্রস্তুতি? এমন প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে খোদ দলটির একাংশেও। অবশ্য এ ব্যাপারে নিরুত্তর থাকলেও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরীও এই পৃথক প্রস্তুতিকে ‘ভালোভাবে’ নিচ্ছেন না। তার মতে, ‘ঘরোয়া কোনো সভার আড়ালে জেলা বিএনপির আহ্বায়ককে পাশ কাটিয়ে এমন সভা আয়োজন তৃণমূলে তাদের অবস্থান না থাকারই প্রমাণ।’

আসলাম চৌধুরী  এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, গিকা চৌধুরীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত আলোচ্য সভাটি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তাকে এ ব্যাপারে কিছুই জানানো হয়নি।

এদিকে সাকা চৌধুরীর ভাই ও উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে প্রধান অতিথি করে কোনো ব্যানার ছাড়াই উত্তর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী আবদুল্লাহ আল হাসানের সভাপতিত্বে সভাটিতে সাকার অনুগত বিএনপির হাটহাজারী উপজেলার (একাংশ) আহ্বায়ক এস এম ফজলুল হকসহ ১০-১২ জন উপজেলা ও ইউনিয়ন পর‌্যায়ের নেতা উপস্থিত ছিলেন। এতে জেলা ও জেলার আওতাধীন শাখাগুলোর সম্মেলনের দিনক্ষণ নির্দিষ্ট হয়। দলের ‘মূলধারা’কে পাশ কাটিয়ে পৃথক গ্রুপের এমন সম্মেলন প্রস্তুতিতে বিভক্তি প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খোন্দকার এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘হাইকমান্ডের অনুমতি বা নির্দেশনার বাইরে কারও এমন বৈঠক কাক্সিক্ষত নয়। জেলা সম্মেলন ইতিমধ্যে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে করার কথা থাকলেও নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি। এখন উপজেলা ও পৌর শাখার সম্মেলনের কাজ চলছে। বিএনপি চেয়ারপারসন দেশে ফিরলে চূড়ান্ত হবে জেলা সম্মেলনের সময়।’ অন্যদিকে বিএনপির জেলার একাংশের কার্যক্রমের আড়ালে সাকা চৌধুরীর রায় কার্যকর-পরবর্তী কোনো অপতৎপরতার প্রস্তুতি চলছে কি না তা নিয়েও সতর্ক হয়ে উঠছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরী অবশ্য এমন তৎপরতাকে ‘গ্রুপটির রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের’ পাশাপাশি ‘কোনো বিশেষ ষড়যন্ত্র’ বলেও মনে করেন। গিয়াস কাদের চৌধুরী অবশ্য সভায় বলেছেন, ‘বিএনপি হাইজ্যাক করা কোনো দল নয়। সারা দেশকে নির‌্যাতনের কসাইখানায় পরিণত করেছে সরকার। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে সরকারকে বিদায়ে সর্বান্তক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’

সর্বশেষ খবর