বুধবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

৬০ দেশের নাগরিকরা বাৎসরিক ভিসা পাবেন : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এদেশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, কৃষ্টি, সভ্যতা, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং সর্বোপরি বাংলাদেশের মানুষের অতিথিপরায়ণতা বিশ্বের যে কোনো পর্যটককে আকৃষ্ট করে। গোটা দেশই যেন এক বিশাল পর্যটন ভূমি। বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের জন্য খুবই সম্ভাবনাময়। বিশ্ব মানচিত্রে একটি নতুন পর্যটন গন্তব্য হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার জন্য এদেশে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উপাদানই রয়েছে। তিনি আরও বলেন, পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশে সম্ভাব্য সব উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। বিদেশিদের জন্য পর্যটনকে আরও সহজ করতে বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে ৬০টি দেশের নাগরিকরা পাবেন তাৎক্ষণিক (অন-অ্যারাইভাল) ভিসা। গতকাল দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বুড্ডিস্ট পর্যটন সার্কিট উন্নয়ন বিষয়ক দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জাতিসংঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থার (ইউএনডব্লিউটিও) সহযোগিতায় বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ‘ডেভলপিং সাসটেন্যাবল অ্যান্ড ইনক্লুসিভ বুড্ডিস্ট হেরিটেজ অ্যান্ড প্রিলিগ্রিমজ সার্কিট ইন সাউথ এশিয়ান বুড্ডিস্ট থাইল্যান্ড’ শীর্ষক দুই দিনের এ সম্মেলনের আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বৌদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যভিত্তিক পর্যটন বিকাশে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। আশা করি, সম্মেলনের প্রতিনিধিরা এ অঞ্চলে পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও প্রসারে একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করতে সক্ষম হবেন। একই সঙ্গে তারা এই রোডম্যাপ বাস্তবায়নে পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার পর্যটন শিল্পের প্রচার ও বিপণন কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী ও গতিশীল করতে ২০১৬ সালকে পর্যটন বর্ষ বা ভিজিট বাংলাদেশ ইয়ার-২০১৬ হিসেবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের পাশাপাশি এই শিল্পের প্রচার ও বিপণনের ওপরও সমধিক গুরুত্ব দিয়ে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের পর্যটন আকর্ষণগুলোকে তুলে ধরার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পর্যটন পণ্য ও সেবাসমূহের প্রচার ও বিপণন এবং দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড কাজ করছে। তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ নৌ-পর্যটনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বা আঞ্চলিক নৌ-পর্যটনে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করতে ভারতের সঙ্গে নৌ-প্রটোকলে যাত্রী পরিবহনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। এ সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রুজেও বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।  প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রতিষ্ঠা করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে কক্সবাজার জেলার সাবরাংয়ে ১০২৮ একর জমির ওপর বিশেষ পর্যটন অঞ্চল (ইটিজেড) গড়ে তোলার কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ইটিজেড নির্মাণে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণেরও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক খান ও ইউএনডব্লিউটিও মহাসচিব ড. তালেব রিফাই, সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী। এ সময় সংসদ সদস্য, কূটনীতিক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।  আয়োজক বাংলাদেশসহ বৌদ্ধ জনসংখ্যা অধ্যুষিত ১৩টি দেশ চীন, জাপান, কোরিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, ভুটান, নেপাল, ভারত ও শ্রীলঙ্কার পর্যটন মন্ত্রীবৃন্দ, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট অন্যরা এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন।

সর্বশেষ খবর