বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
নয়াদিল্লির চিঠি

নতুন পার্টির নাম নিয়ে মমতা-মুকুল দ্বৈরথ

ঋতুপর্ণা রায়

নামের মালিকানা নিয়ে এক অভিনব দ্বৈরথ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুকুল রায়ের। এ দ্বৈরথ তারা করছেন পিছনের আসনে বসে। কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের ‘ডিপার্টমেন্ট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল পলিসি অ্যান্ড প্রমোশন কন্ট্রোলার জেনারেল পেটেন্টস ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস’-এ গত জুলাই মাসে একটি আবেদন জানিয়েছিলেন তৃণমূল সংসদ সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস নাম এবং প্রতীকের ‘পেটেন্ট’ দাবি করেছেন অভিষেক। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এর কিছু পরে মুকুল রায়ের পরিকল্পিত নতুন পার্টির পক্ষ থেকে ওই একই দফতরে একটি চিঠি দেওয়া হয়। সেখানে ‘ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি’ এ প্রস্তাবিত নতুন রাজনৈতিক দলের নামটি লিখে জানতে চাওয়া হয়, এ নামের বৈধতা নিয়ে কোথাও কোনো সমস্যা রয়েছে কিনা। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, মন্ত্রণালয় থেকে মুকুল শিবিরকে জানিয়ে দেওয়া হয় এ দুটি নাম নিয়ে (মমতার তৃণমূল এবং মুকুলের পরিকল্পিত দল) কোথাও পরস্পরের মধ্যে কোনো সংঘাত (কনফ্লিক্টস অব ইন্টারেস্ট) নেই। নতুন দল গড়ার তোড়জোড় শুরু করে দেওয়ার পরেও মুকুল রায় অবশ্য এখনো নিজেকে তৃণমূলের ‘পিছনের সারিতে বসা সংসদ সদস্য’ হিসেবে চিহ্নিত করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। এর আগে ‘নভেম্বর বিপ্লব’-এর প্রসঙ্গ তুলে চলতি মাসেই একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মুকুল। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেই বিপ্লবের রূপরেখা, অর্থাৎ তিনি নিজে কবে দল ছাড়ছেন তা স্পষ্ট করছেন না। তবে অমিতাভ বাবুর দল হিসেবে ‘ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি’র কথা উল্লেখ করে মুকুল বলছেন, এর আগে ভারতীয় রাজনীতিতে একটি নাম ভেঙে নতুন দল তৈরি হয়েছে এমন উদাহরণ যথেষ্ট। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের পর কংগ্রেস (আই), বাংলা কংগ্রেস,  ম্যানিলা কংগ্রেস, এমন অজস্র দল তৈরি হয়েছে। সিপিআই এবং সিপিএম, জনতা দল এবং ভারতীয় জনতা পার্টি এমন উদাহরণের কোনো অভাব নেই। এ ক্ষেত্রে কেন তবে আগে থেকেই অভিষেকের আবেদনের খবর গোপন সূত্রে পেয়েই, মুকুলকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হলো? আপত্তি রয়েছে কিনা জানতে চাইতে হলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে?

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, সামনেই নির্বাচন। সময় কম। তাই কোনো ব্যাপারেই কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হোক এটা চাইছেন না মুকুল রায়। ইতিমধ্যেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে ‘ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেস’ নামটি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে অতীতের উদাহরণ তুলে মুকুল শিবিরের বক্তব্য, এ ব্যাপারে আপত্তি করার কোনো যুক্তিগ্রাহ্য কারণই নেই কমিশনেরও। মুকুল শিবির আশা করছে, আর দুই সপ্তাহের মধ্যে কমিশন নতুন দলটিকে নথিভুক্তিকরণের নোটিস দিয়ে দেবেন। তারপর প্রতীকের জন্য নিজেদের করা নকশা জমা দেওয়া হবে নির্বাচন কমিশনের কাছে।

সর্বশেষ খবর