শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

অন্তহীন সমস্যায় রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

অন্তহীন সমস্যায় রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল

পর্যাপ্ত জনবল ও চিকিৎসক সংকটসহ অন্তহীন সমস্যায় জর্জরিত রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল। ১৯৮৩ সালে ৫০ শয্যা দিয়ে চালু হয় এ হাসপাতালটি। পরে একে ১০০ শয্যায় রূপান্তরিত হলেও বিভিন্ন সমস্যায় ভেঙে পড়েছে চিকিৎসা কার্যক্রম। জেলার অধিকাংশ চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকার পাশাপাশি নার্স ও কর্মচারী সংকটও তীব্র হয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি সদর হাসপাতালে গুরুত্বপূর্ণ পদ মেডিসিন কনসালটেন্ট, সার্জারি কনসালটেন্ট, অর্থ সার্জারি কনসালটেন্ট, চক্ষু, নাক-কান-গলা, শিশু, অ্যানেসথেসিয়া ও প্যাথলজিক্যাল এবং রেডিও কনসালটেন্টসহ কনসালটেন্ট পদগুলোতে দীর্ঘদিন কোনো ডাক্তার নেই বললেই চলে। হাসপাতালে ৩০টি চিকিৎসক পদের বিপরীতে আছেন মাত্র ১৪ জন। আরও ১৬ জন ডাক্তারের পদ এখন পর্যন্ত শূন্য। অভিযোগ রয়েছে, শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও তা কাগজে-কলমেই রয়ে গেছে।  চিকিৎসক-নার্স সংকট ছাড়াও প্রয়োজনীয় ওষুধপথ্য পাওয়া যায় না হাসপাতালটিতে। দুর্গন্ধময় পরিবেশের কারণে রোগীর সঙ্গে আসা সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিশেষ করে মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে রোগীদের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। প্রাপ্ত অভিযোগ অনুযায়ী, অনেক সময়ই স্থান সংকুলান না হওয়ায় বারান্দায় ও মেঝেতে গাদাগাদি করে অবস্থান নিতে হয় রোগীদের। অনেক সময় চিকিৎসকরা রোগী না দেখেই ছাড়পত্র দিয়ে দেন। হাসপাতালের ভিতর বাথরুমগুলো ময়লা-আবর্জনা ও মল-মূত্রের দুগর্šক্ষে¬ ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন ডা. স্নেহ কান্তি চাকমা বলেন, বর্তমানে রাঙামাটি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে চিকিৎসক ও জনবল, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংকটের বিষয়টি সত্য। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ডাক্তার স্বল্পতার পরও সীমাবদ্ধতার মধ্যে রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। জানা গেছে, দীর্ঘ কয়েক বছরেও চালু হয়নি রাঙামাটি জেলারেল হাসপাতালের পাশে নির্মিত হৃদরোগ চিকিৎসার সিসি ইউনিট ভবন (করোনারি কেয়ারি ইউনিট)।

২০০৯ সালে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে রাঙামাটি সদর হাসপাতালের পাশে সিসি ইউনিট আধুনিক ভবন নির্মাণ করা হয়। এ ভবনে রয়েছে দুটি কেবিনসহ ২০ শয্যার দুটি ওয়ার্ড। ওই সময় ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হলেও পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি, জনবল ও চিকিৎসকের অভাবে চালু করা যায়নি ইউনিটের চিকিৎসা কার্যক্রম। আরও অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন পার হলেও হৃদরোগের সিসি ইউনিটের শূন্য পদগুলো পূরণের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাই প্রায় সময়ই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকে। এ বিষয়ে রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন ডা. স্নেহ কান্তি বলেন, করোনারি ইউনিটটি চালু করতে যে জনবল প্রয়োজন তা নেই। আন্তঃ মন্ত্রণালয়ে জনশক্তির জন্য চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। হৃদরোগ চিকিৎসার সিসি ইউনিটের শুধু ভবন নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, যন্ত্রপাতিসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা না থাকায় এ ইউনিটের কার্যক্রম চালু করা যাচ্ছে না। তা ছাড়া ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিরও দরকার।

সর্বশেষ খবর