রবিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জোট শরিকরা ধানের শীষ নৌকা পাচ্ছে না

গোলাম রাব্বানী

জোট শরিকরা ধানের শীষ নৌকা পাচ্ছে না

সংসদ নির্বাচনের মতো দলীয় প্রতীকে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন হবে। তবে কোনো শরিক দলের প্রার্থী জোটের প্রধান দলের প্রতীক (নৌকা বা ধানের শীষ) নিয়ে লড়তে পারবেন না। সংসদ নির্বাচনের জোটভুক্ত দলগুলো জোটের প্রধান দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারলেও দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পৌরসভা নির্বাচনে এমন সুযোগ রাখেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফলে আসন্ন পৌর নির্বাচনে জোটগতভাবে প্রার্থী দিলেও আওয়ামী লীগের নৌকা ও বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক পাবেন না জোটভুক্ত অন্য দলগুলো। সেই সঙ্গে প্রস্তাবিত নির্বাচন বিধিমালায় দলীয় মনোনয়ন দিতে ও তা চূড়ান্ত করতে কেন্দ্রীয় কমিটির পাশাপাশি স্থানীয় কমিটিকেও ক্ষমতাশালী করা হচ্ছে।

ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, নিজেদের দলের প্রতীক রেখে জোট শরিক আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা নিয়ে ভোট করে এখন সংসদ সদস্য জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তেমনি বিএনপি জোটের শরিক বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়েছিলেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে। কিন্তু সংসদ নির্বাচনের মতো দলীয় প্রতীকে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন হলেও কোনো শরিক দলের প্রার্থী জোটের অন্য দলের প্রতীক নিয়ে লড়তে পারবেন না। নির্বাচন কমিশন দলভিত্তিক পৌরসভা নির্বাচনের বিধিমালার খসড়া তৈরি করে তা ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় নির্বাচনের আইন সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর পৌরসভা নির্বাচনের সংশোধিত আইন অধ্যাদেশবলে কার্যকর হয়েছে। ডিসেম্বরে পৌর ভোট করতে হবে বলে সংসদে বিল আনতে দেরি এ ক্ষেত্রে করা হয়নি। ইসি সচিব বলেন, অধ্যাদেশের আলোকে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী প্রস্তাব আনা হয়েছে। দলের গঠনতন্ত্রের বিষয়ে দলগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, যুক্তিসঙ্গতভাবে স্থানীয় সরকারের পৌরসভা নির্বাচনে কোনো জোট শরিক দলের সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করতে পারবে। কিন্তু নিজ দলের প্রতীক অন্য দলের প্রার্থীকে দেওয়ার সুযোগ পাবে না। তারা বলেন, প্রতিটি পৌরসভায় গড়ে ১২টি করে ওয়ার্ড রয়েছে। সে ক্ষেত্রে মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর মিলিয়ে গড়ে ১৬ জন একটি দলের প্রার্থী থাকবেন, যারা একই দলের প্রতীকে নির্বাচন করবেন। প্রতি পৌরসভায় জোট করে একের প্রতীক অন্যকে ব্যবহারের সুযোগ দিলে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। এ জন্য বাস্তবসম্মতভাবে সংসদের মতো স্থানীয়তে বিধানটি রাখা হয়নি- নিজেদের প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেন ইসির এক কর্মকর্তা। দলগুলোর রাজনৈতিক জোট থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, জোটগত হয়ে প্রার্থী সমর্থনে তো কোনো বাধা নেই। দলের মনোনীত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সমমর্যাদার পদাধিকারী বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি দল মনোনয়নে প্রত্যয়ন করতে পারবেন। তফসিল ঘোষণার তিন দিনের মধ্যে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম, পদবি, স্বাক্ষরসহ একটি পত্র রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইসি সচিবালয়ে পাঠানোর বিধানও প্রস্তাব করা হয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য শর্ত বাছাই : প্রস্তাবিত বিধিমালায় বলা হয়েছে- স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মেয়র পদে ১০০ ও কাউন্সিলর পদে ২০ জন ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা দিতে হবে। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় এ তালিকার পাঁচটি দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে চিহ্নিত করে তদন্ত করা হবে। এ ছাড়া নির্বাচিত প্রার্থীদের স্বতন্ত্রের জন্য সমর্থনযুক্ত তালিকার দরকার পড়বে না। দলের নির্বাচনী ব্যয়, দল মনোনীত প্রার্থীর প্রার্থিতা টিকিয়ে রাখার নতুন বিধানও যুক্ত করা হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর