মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

পাহাড়ে রসালো কমলার বাজার

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ে রসালো কমলার বাজার

পাহাড়ে উৎপাদিত টস্টসে রসালো কমলা এখন বাজারে। অবশ্য পরিপক্ব না হওয়ায় এ কমলা স্বাদে কিছুটা টক এবং রঙেও সবুজ। যদিও কোনো কোনো বাগানের কমলায় রং ধরেছে। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে ফিকে হলুদ রঙের কমলা।

বর্তমানে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান  পার্বত্য জেলায় ব্যাপক হারে কমলার চাষাবাদ হচ্ছে। ফলনও হচ্ছে প্রচুর। স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে পাহাড়ে কমলা বাজারজাত হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। কয়েক বছর আগেও পার্বত্যাঞ্চলে কমলা আমদানি হত সিলেটসহ দেশের অন্য অঞ্চল থেকে। এখন পাহাড়ে উৎপাদিত কমলাই যাচ্ছে পার্বত্য জেলার বাইরে। উৎপাদনও হচ্ছে বেশি। ফলে স্থানীয় বাজারে কমলার দাম সহনীয়। প্রতি কমলা বিক্রি হচ্ছে ১০-২০ টাকায়। স্থানীয় কমলা চাষি পলাশ চাকমা জানান, তিনি ৯ বছর  ধরে ব্যক্তিগতভাবে পাহাড়ে কমলা চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন। তাছাড়া আর্থিকভাবে বেশ লাভবানও হচ্ছেন। রাঙামাটি কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর রাঙামাটি জেলায় ৭৬০ হেক্টর জমিতে কমলার চাষ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ১১.৭০ মেট্রিক টন। ফলন ভালো দেখে বর্তমানে পার্বত্যাঞ্চলে অনেকেই কমলা চাষে ঝুঁকেছেন। ফলে কমলার চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তিন পার্বত্য জেলায়। জানা যায়, পাহাড়ে প্রথম কমলার চাষ হয় ১০ থেকে ১২ বছর আগে। রাঙামাটির প্রত্যন্ত উপজেলা বাঘাইছড়ি সীমান্তবর্তী সাজেক ইউনিয়নে। সাজেকে চাষ ভালো হওয়ায় উৎপাদিত কমলা অল্প সময়েই সুনাম অর্জন করে। সাজেক ছাড়াও পার্বত্য তিনটি জেলায় খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি, মাটিরাঙ্গা, দীঘিনালা ও রামগড়ে কমলার আবাদ হচ্ছে। বিশেষ করে রাঙামাটি জেলার সদর উপজেলা, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ির ফারুয়া, কাপ্তাই ও নানিয়ারচর, বান্দরবান জেলার সদর উপজেলা, রুমা, থানচি, লামা, আলীকদম ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় প্রচুর কমলার চাষ হচ্ছে।  রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রমনি কান্তি চাকমা জানান, পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া উপযুক্ত হওয়ায় এ বছর কমলার চাষ বেড়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। মাটি উর্বর হওয়ায় পাহাড়ের কমলাগুলো মিষ্টি ও রসালো হয়ে থাকে। তবে গান্ধী পোকার আক্রমণের কারণে কমলা তাড়াতাড়ি গাছ থেকে ঝড়ে পড়ছে। এ জন্য কমলা গাছের পরিচর্যা প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য সার ও ওষুধ প্রয়োগের কলাকৌশল চাষিদের জানা খুবই প্রয়োজন।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর