মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
সংসদে টিআইবিকে তুলাধোনা

অবৈধ রাষ্ট্রপতিরা পেনশন পাবেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবৈধ ও অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলকারী রাষ্ট্রপতিদের অবসর ভাতা, আনুতোষিক বা অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার পথ বন্ধ করার বিধান রেখে রাষ্ট্রপতির অবসর ভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা বিল ২০১৫ গতকাল সংসদে উত্থাপিত হয়েছে।

সংসদে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বিলটি উত্থাপন করেন। ১৯৭৯ সালের প্রেসিডেন্টস পেনশন অরডিন্যান্স বাতিল করে নতুন আইন প্রণয়নের জন্য বিলটি সংসদে তোলা হয়। বিলে বলা হয়, অসাংবিধানিক পন্থায় বা অবৈধ উপায়ে রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন বা হয়েছিলেন বলে সুপ্রিমকোর্ট কর্তৃক ঘোষিত হলে, তিনি অবসর ভাতা পাবেন না। রাষ্ট্রপতি তার জীবদ্দশায় নিজে অথবা মৃত্যুবরণ করলে তার মনোনীত ব্যক্তি বা মনোনীত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার উত্তরাধিকারীরা এবং কোনো রাষ্ট্রপতি এর আগে আনুতোষিক না নিলে তার উত্তরাধিকারীরা তা নিতে পারবেন। যদি কোনো রাষ্ট্রপতি নৈতিক স্খলন বা অন্য কোনো অপরাধে আদালতে দণ্ডিত হন, তাহলে তিনি অবসর ভাতা পাবেন না। একই সঙ্গে দায়িত্ব পালন শেষে তিনি যদি কোনো দফতর, আসনে বা মর্যাদায় দায়িত্ব পালন করেন, যার জন্য তিনি সংযুক্ত তহবিল হতে বেতন বা অন্য কোনো সুবিধা পাচ্ছেন, তবে তিনি অবসর ভাতা পাবেন না। হাইকোর্টের দুটি আলাদা রায়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর জারি করা সামরিক শাসনামল, জিয়াউর রহমান ও এরশাদের শাসনামলকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন খন্দকার মুশতাক আহমেদ, বিচারপতি আবু সায়েম, জিয়াউর রহমান, বিচারপতি এ এফ এম আহসানুদ্দিন চৌধুরী ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

সংসদে টিআইবিকে তুলোধনা : জাতীয় সংসদকে ‘পুতুল নাচের নাট্যশালা’ বলে মন্তব্য করায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনার দাবি তুলেছেন সংসদ সদস্যরা। একই সঙ্গে সংসদের বিশেষ অধিকার বা প্রিভেলেজ কমিটির মাধ্যমে সমন জারি করে টিআইবিকে সংসদের সামনে হাজির করাসহ টিআইবির লাইসেন্স সাসপেন্ড করারও দাবি ওঠে সংসদে। আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য দলের সদস্যরা সংসদ সম্পর্কে টিআইবির সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যকে ধৃষ্টতাপূর্ণ, সংবিধান ও আইনের লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করে টিআইবির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকালের বৈঠকে মাগরিবের পর অনির্ধারিত আলোচনায় এসব দাবি জানানো হয়। বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ প্রথমে এ বিষয়ে সংসদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরে এ বিষয়ে বক্তব্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, আইনবিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল ও স্বতন্ত্র সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী। রওশন এরশাদ বলেন, টিআইবি বর্তমান সংসদ ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা শুরু করেছে। কিন্তু টিআইবি কেন তাদের কর্মক্ষেত্রের বাইরে গিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। কেন নতুন নির্বাচন দাবি করছে? তারা সংসদের বিরোধী দলকে কথিত বিরোধী দল বলেও অভিযোগ তুলেছে। এসব বক্তব্য সংসদের বিবেচনায় আনা উচিত।

সংসদের বিশেষ অধিকার বা প্রিভেলেজ কমিটির মাধ্যমে সমন জারি করে টিআইবিকে সংসদের সামনে হাজির করে জবাবদিহিতা নেওয়ার দাবি জানান তোফায়েল আহমেদ। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে টিআইবি তাদের এখতিয়ারবহিভর্‚ত বক্তব্য দিচ্ছে। যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে, ঠিক তখনই টিআইবি সংসদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিল। তাদের এ বক্তব্য প্রমাণ করেছে, তারা বিএনপির অঙ্গ-সংগঠন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সংবিধানের ৭-এর ক ধারায় সুস্পষ্ট বলা আছে, যদি কেউ সংবিধানের বিপরীতে কথা বলেন, তিনি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে অভিযুক্ত হবেন। টিআইবি সংসদের বিরুদ্ধে কথা বলে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর