সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ উন্নয়নের বিস্ময় হিসেবে আবির্ভূত হবে

প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের বিস্ময় হিসেবে আবিভর্‚ত হবে। শত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও সব ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ। আর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনেও বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়ন ধারা এগিয়ে নিতে উন্নয়ন সহযোগীরা তাদের সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের-২০১৫ (বিডিএফ) সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে দেশ ও মানুষের সার্বিক উন্নয়নে বদ্ধপরিকর। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বর্তমান সরকার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও কর্মসূচি এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়ন ধারা এগিয়ে নিতে সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) পূরণে বাংলাদেশ যে সাফল্য দেখিয়েছে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ক্ষেত্রেও একইভাবে সফল হবে বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) মনোনীত প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহ-সভাপতি ওয়েনচাই ঝাং প্রমুখ। এ ছাড়া ৩২টি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ অমিত সম্ভাবনার দেশ। বিশ্বের বুকে একটি গতিশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার মতো সব উপায় ও উপকরণ আমাদের রয়েছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ মধ্যম-আয়ের দেশে উন্নীত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আর ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। সুষম ও পারস্পরিক উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক, দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে সার্ক, বিমসটেক এবং বিসিআইএম-এ বাংলাদেশের ভূমিকা অপরিসীম। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ বৃদ্ধির সুবিধার্থে এ অঞ্চলের মধ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। চারটি দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে। এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিবেশ ও কারিগরি খাতে পারস্পরিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারে। তিনি বলেন, এখন আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। এ সময়ে দারিদ্র্যের হার ১৪ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এবং তা অর্জন করা সম্ভব হবে। গত ছয় বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অর্থায়নে বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতাও কমে এসেছে। শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক পর্যায়ে কিছু অগ্রগতির পরও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত তহবিলগুলোর বিপুল পরিমাণ সম্ভাবনা এখনো পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি। বৈশ্বিক জলবায়ু অর্থায়ন প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান শর্তসমূহ কঠিন ও জটিল। এ সংক্রান্ত তহবিলের অর্থ ছাড়ের ‘ধীরগতির’ অবসান ঘটানো এখন জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর