সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

নামেই নালিতাবাড়ী হাসপাতাল

চিকিৎসক যন্ত্রপাতি কিছুই নেই

নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি

নামেই নালিতাবাড়ী হাসপাতাল

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় ৫০ শয্যা হাসপাতালের প্রশাসনিক অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসক, লোকবল ও যন্ত্রপাতি নেই- তাই হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে ৩১ শয্যা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কার্যক্রম শুরু হয়। চিকিৎসক ও লোকবল সংকটে দীর্ঘদিন ৩১ শয্যা কার্যক্রম চলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। ২০১১ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৩১ শয্যাকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার  জন্য  পৌনে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ করা হয়। নতুন ভবনের দোতলায় রোগীদের থাকার ১৯ শয্যার একটি ওয়ার্ড, তিনটি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চেম্বার তৈরি করা হয়। এ ছাড়া চিকিৎসকদের থাকার জন্য ১২টি আবাসিক কোয়ার্টারসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পৃথক আবাসিক কোয়ার্টারও নির্মাণ করা হয়। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৫০ শয্যার জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন মেলে। চলতি বছরের ২৫ জুলাই থেকে খাদ্য ও পথ্য সরবরাহের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। অবশেষে গত ১৭ অক্টোবর এলাকার এমপি ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর উপস্থিতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ৩১ থেকে ৫০ শয্যা হাসপাতালের ভবন উদ্বোধন করেন। তারপর দেড়মাস পেরিয়ে গেছে, কিন্তু এখনো চিকিৎসক, জনবল ও যন্ত্রপাতির কিছুই যোগ হয়নি। ৫০ শয্যা হাসপাতালের নিয়মানুযায়ী যেখানে ১২৯ জন জনবল থাকার কথা, সেখানে রয়েছে মাত্র ৪৭ জন। ৫০ শয্যার জন্য প্রথম শ্রেণির মর্যাদায় একজন তত্ত্বাবধায়ক থাকার কথা থাকলেও পদটি শূন্য রয়েছে। তবে আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) মেহেদী হাসান ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। জুনিয়র কনসালটেন্ট ১০ জন থাকার কথা, কিন্তু সবগুলো পদ শূন্য রয়েছে। সহকারী সার্জন ১১ জনের মধ্যে রয়েছেন ৮ জন (৬ জন ইউনিয়নের সাব সেন্টারের, আর ২ জন ওএসডি)। ডেন্টাল সার্জন হিসেবে তোফাজ্জল হোসেন দায়িত্বে থাকলেও ২০১৪ সালের ৭ আগস্টে যোগদান করে তিনি আর কর্মস্থলে আসেন না। ‘বড় নেতা’র আত্মীয়র পরিচয় দিয়ে প্রতি মাসে এসে কেবল বেতন উত্তোলন করে চলে যান। মুঠোফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ‘ছুটিতে আছেন’ বলে এ প্রতিবেদককে জানান। দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারীর ১৫ জনের মধ্যে রয়েছেন ৯ জন। তৃতীয় শ্রেণির ৬৭ জনের মধ্যে রয়েছেন ১৩ জন। চতুর্থ শ্রেণির ২৩ জনের মধ্যে রয়েছেন ১৫ জন। এ অবস্থায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তারা অবিলম্বে চিকিৎসক ও লোকবল নিয়োগ করে, যন্ত্রপাতি দিয়ে ৫০ শয্যার হাসপাতালের কার্যক্রম দ্রুত চালু করার দাবি করছেন। আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) মেহেদী হাসান জানান, ৫০ শয্যার অনুমোদন রয়েছে, এর কার্যক্রম চালু করতে চিকিৎসকসহ ১২৯ জন লোকবলের প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর