শিরোনাম
সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

পাটের ব্যাগ ব্যবহারে আজ থেকে সাঁড়াশি অভিযান

সোনালি দিন ফিরবে : মির্জা আজম

নিজস্ব প্রতিবেদক

ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি- এই ছয়টি পণ্যে পাটের মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে আজ থেকে সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হচ্ছে। ‘ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং অ্যাক্ট-২০১০’ নামের আইনটি কার্যকর করতে পাটকল রয়েছে এবং যেখানে পাটের বস্তা ব্যবহার হয় এমন ৩১টি জেলায় ১০টি মনিটরিং টিম সক্রিয় থাকবে। আইন অমান্যকারীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। এর মধ্য দিয়ে দেশে পাটের হারানো সুদিন ফিরে আসবে বলে মনে করেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। তিনি বলেন, আইনটি বাস্তবায়ন হলে দেশের পাটকলগুলোতে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং পাটকলগুলো সারা বছর সচল থাকবে। মির্জা আজম বলেন, পাটের মাধ্যমে বিশ্ব বাণিজ্যে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব বাড়ানোর যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা কাজে লাগাতে হবে। যে কোনো মূল্যে পাটের সোনালি দিন ফেরানো হবে। এদিকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, আইনটি বাস্তবায়ন করতে প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের নেতৃত্বে আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় কারওয়ান বাজার এবং আড়াইটায় বাদামতলীতে পাটের বস্তার সঠিক ব্যবহার, পাটের বস্তার জোগান ও দেশব্যাপী পরিচালিত সাঁড়াশি অভিযানের অগ্রগতি সরেজমিন পরিদর্শন করবেন। জানা গেছে, ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং অ্যাক্ট কার্যকর করতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সরকারের অনেকগুলো মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কাজ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা জারি করেছে, ছয় পণ্যে পাটের ব্যাগ ব্যবহার না করলে ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণ পাবেন না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, পাটের ব্যাগ ব্যবহার না করলে লাইসেন্স বাতিল হবে রাইস মিল, হাসকিং ও চাতাল মালিকদের। খাদ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ছয়টি পণ্যের ক্ষেত্রে ‘ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং অ্যাক্ট’ ফলো না করলে ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। এভাবে অনেক মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট রয়েছে নতুন এই আইন বাস্তবায়নে। এ লক্ষ্যে দেশের সড়ক-মহাসড়ক, চাল উৎপাদনকারী এলাকাসহ রাজধানীর প্রবেশ পথে সাঁড়াশি অভিযান চালাবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং অ্যাক্ট বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশে পাটের সুদিন ফিরে আসবে। সরকারি-বেসরকারি পাটকলগুলো সারা বছর কর্মমুখর থাকবে। বর্তমানে আমরা যে পরিমাণ পাট রপ্তানি করি, নতুন আইনটি বাস্তবায়ন হলে সে পরিমাণ পাটের বাজার দেশেই সৃষ্টি হবে। মির্জা আজম বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ থেকে পরিবেশের ওপর সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ পাওয়ার পর দেশের পরিবেশ রক্ষায় বিশাল দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে আমাদের ওপর। সে জন্য আমরা পরিবেশ সহায়ক পাটপণ্য ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। মির্জা আজম বলেন, পাটের উৎপাদন বাড়ানো, অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা তৈরি ও রপ্তানির সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। পাট এখন আর কেবল কৃষিপণ্য নয়, বড় অঙ্কের মূল্য সংযোজনকারী শিল্পপণ্য। পাট এখন বিমানের বডি কিংবা বিলাসবহুল গাড়ির বডি তৈরিতেও ব্যবহার হচ্ছে। পাটের মাধ্যমে বিশ্ব বাণিজ্যে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব বাড়ানোর যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা কাজে লাগাতে সরকার বদ্ধপরিকর। যে কোনো মূল্যে পাটের সোনালি দিন ফেরানো হবে। সেভাবেই পরিকল্পনা নিচ্ছি আমরা। বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, এই আইন বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে প্রতি বছর ৫৫ কোটি জুট ব্যাগের প্রয়োজন পড়বে। এর ফলে তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকার পাট আমরা স্থানীয়ভাবে কনজিউম করতে পারব। এটা প্রতি বছর আমরা যে পরিমাণ পাট রপ্তানি করি তার প্রায় সমান। তিনি বলেন, আইনটি বাস্তবায়ন হলে পাট চাষিরা ভালো দাম পাবে। পাটকলগুলো সারা বছর কর্মমুখর থাকবে। পাট নিয়ে আমাদের আর কোনো হতাশা থাকবে না। আমরা পাটপণ্যের বহুমুখীকরণে মনোযোগ দিতে পারব। তিনি ‘ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং অ্যাক্ট’ বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর