মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মৌলভীবাজার হাসপাতাল এখন নিজেই রোগী

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজার হাসপাতাল এখন নিজেই রোগী

সাত উপজেলার ১৫ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মৌলভীবাজার আধুনিক হাসপাতাল। কিন্তু জনবল সংকটে এ হাসপাতালে তেমন কোনো চিকিৎসাই মিলছে না। ভেঙে পড়েছে পুরো স্বাস্থ্যসেবা।

১৯৮৪ সালে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হিসেবে এর কার্যক্রম শুরু হলেও পরে এটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ২০১২ সালে একে ২৫০ শয্যায় নিয়ে এসে ‘আধুনিক হাসপাতাল’ বলে নামকরণ করা হয়। কিন্তু নামেই আধুনিক। কারণ এজন্য কোনো চিকিৎসক বা জনবল নিয়োগ  করা হয়নি। জানা যায়, হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক, ১৯ জন চিকিৎসকসহ দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির মোট ৫০ জন কর্মচারীর সংকট রয়েছে। এ অবস্থায় হাসপাতালে সেবার মান কমছে। এই সুযোগে গজিয়ে উঠছে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতিদিন বহিঃবিভাগে হাজার রোগীর চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি ২৭৫ জন রোগীকে অন্তঃবিভাগে চিকিৎসা দিচ্ছেন মাত্র ৩৩ জন চিকিৎসক। খোঁজ নিতে গিয়ে এই জীর্ণ দশার হাসপাতালেও মিলেছে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ। ডাক্তাররা রোগীদের পরীক্ষার পরামর্শ দিয়ে জনবল সংকটের অজুহাত তুলে প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।  হাসপাতালের পরিবেশও ভয়াবহ অস্বাস্থ্যকর। রোগীরা জানান, ডাক্তাররা ওষুধ লিখে দেন, কিন্তু তা হাসপাতালে মেলে না। গত রবিবার সেবা নিতে আসা জুলেখা বিবি (৬৫) নামে এক বৃদ্ধা মহিলা কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘বাবা আমি গরিব মানুষ। হাসপাতালে আইছলাম সরকারি ডাক্তার দেখাইয়া ওষুধ নিতাম। অখন বাড়িত যাইবার টেকা নাই’। তিনি জানান, ডাক্তার পরীক্ষা ও ওষুধ লিখে দিয়ে বলেছেন, বাইরে থেকে দেখিয়ে আনতে। বাইরে থেকে পরীক্ষা করাতে তার সব টাকা শেষ। হাসপাতালে তিনি কোনো ওষুধপত্র পাননি। ফলে এখন চোখে পানি নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতালের অবস্থা সম্পর্কে ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. সুব্রত কুমার রায় বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সীমিত জনবল নিয়ে যতটুকু সম্ভব সেবার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর