শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
পীর হত্যার পরিকল্পনা

নতুন জঙ্গি সংগঠনের ছয়জন রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘মুজাহিদ অব বাংলাদেশ’-এর গ্রেফতার ছয় জঙ্গির রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। আদালত তাদের ছয় দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

এ ছয় জঙ্গি হলেন জহিরুল ইসলাম ওরফে আনসার ওরফে চূড়ান্ত লড়াই ওরফে জহির, খন্দকার রাজেশ সোবাহান ওরফে রাজু ওরফে কাঁচা মরিচ ওরফে আদার ব্যাপারী, আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে আবির ওরফে মৌমাছি ওরফে নিয়মের অনিয়ম ওরফে এক টুকরো মেঘ ওরফে সাদা পাতা, আব্রাহাম আহমেদ আল-তারেক, মোরশেদুল ইসলাম ওরফে কিংমোর খান, কাজী বাপ্পি আহমেদ ওরফে সাজ্জাদ ওরফে তারেক বিন জিয়া ওরফে মোল্লা আক্তার মো. মনসুর। তদের বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় একটি ল্যাপটপ ও ১০টি মোবাইল ফোন সেটও উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, জেএমবির আদলে গড়া নতুন এ ‘জঙ্গি’ সংগঠনের ছয় সদস্য ঢাকার এক পীরকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। এ ছাড়া তারা প্রশিক্ষণের জন্য গাজীপুরের সাফারি পার্কের আশপাশ এবং চট্টগ্রামের বনাঞ্চল বেছে নিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম-কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম জানান, জেএমবির আদলে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘মুজাহিদ অব বাংলাদেশ’-এর সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। তারা ফেসবুক ও অনলাইনের মাধ্যমে আল-কায়েদাকে অনুসরণ করতেন। নতুন এ সংগঠনে ২৫-৩০ জন সদস্য রয়েছেন। তারা মনে করেন বিভিন্ন মাজারের পীরেরা অনুসারী তৈরি করে শিরক করছেন। মুসলমানদের বিভ্রান্ত করছেন। তাদের হত্যা করা ‘জিহাদ’। এরই অংশ হিসেবে তারা রাজধানীর এক পীরকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। পুলিশের তৎপরতার কারণে ওই পীর এখন নিরাপদে আছেন। তিনি আরও বলেন, আগের কোনো পীর হত্যার সঙ্গে এদের সংশ্লিষ্টতা নেই। সেগুলো জেএমবি করেছিল। তিনি উল্লেখ করেন, নতুন এ সংগঠন দুই বছর ধরে সংগঠিত হচ্ছে। এর সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে চাকরি করেন। জীবনযাপনের জন্য বেতনের কিছু টাকা রেখে বাকিটা তারা এ কাজে ব্যবহার করতেন। তাদের এক বড় নেতা আগেই গ্রেফতার হয়েছেন। প্রয়োজনে সেই বড় নেতাকে কারাগার থেকে এনে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মনিরুল ইসলাম জানান, কোনো গোয়েন্দা সংস্থা যাতে ফেসবুক আইডি দেখে তাদের কথিত জিহাদের বিষয়টি টের না পায়, সে জন্য তারা অদ্ভুত নামে পেজ খোলেন। তাদের সুনির্দিষ্ট কোনো নেতা নেই। সবাই নিজের মতো জিহাদ প্রতিষ্ঠার কাজ করছিলেন।

‘জেএমবি’ কিংবা ‘এবিটি’র সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। নতুন এ সংগঠন আল-কায়েদার অনুসারী হলেও আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার (একিউআইএস) সঙ্গে তাদের কোনো নেটওয়ার্ক বা যোগাযোগ নেই। তাদের কার্যক্রম এখনো প্রাথমিক পর‌্যায়ে রয়েছে। এ জন্য তাদের বড় অর্থসংস্থানের প্রয়োজন হয়নি। তারা ছুরি-চাকু চালানো, বর্শা নিক্ষেপের ট্রেনিং নিয়েছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। আগে তাদের কেউ অন্য জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কিনা, তা জানার চেষ্টা চলছে। এদিকে আদালতসূত্র জানায়, গতকাল দুপুরে পুলিশ গ্রেফতার ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিল। তবে আদালত তাদের ছয় দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

সর্বশেষ খবর