বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

শুধু সেবা নয় আতিথেয়তাও যেখানে মূলমন্ত্র

শামছুল হক রাসেল, কুয়ালালামপুর থেকে

শুধু সেবা নয় আতিথেয়তাও যেখানে মূলমন্ত্র

শুধু চিকিৎসা নয়, আতিথেয়তা ও পর্যটনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াও মালয়েশিয়ার হাসপাতালগুলোর মূলমন্ত্র। চমৎকার আবহাওয়া দেশটিকে দিয়েছে হেলথ ট্যুরিজমের আবহ। এ বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করে চলছে এসব হাসপাতাল। বিভিন্ন দেশ থেকে রোগীরা আসছেন। আধুনিক সরঞ্জাম ও প্রাচ্যের আতিথেয়তাকে পুঁজি করে কুয়ালালামপুরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে কেপিজে তাওয়াক্কাল স্পেশালিস্ট হসপিটাল, আইজেএন, পানতাই হসপিটাল এবং রামসায় সাইম ডারবে হেলথ কেয়ারের মতো হাসপাতালগুলো। প্রতি বছর প্রায় ১৫ হাজার বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় আসেন চিকিৎসাসেবা নিতে।  

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে সাধারণত সিঙ্গাপুর বা ব্যাংককে যান রোগীরা। এ স্রোতধারায় অনেক পরিবর্তন এনেছে মালয়েশিয়ার চিকিৎসা ব্যবস্থা। কারণ চিকিৎসার পাশাপাশি খরচের দিকটাও চিন্তা করেন রোগী বা তার পরিবার। কুয়ালালামপুরে সিঙ্গাপুরের তুলনায় ৪০ ভাগ এবং ব্যাংককের তুলনায় ৩০ ভাগ কম খরচেই আন্তর্জাতিক চিকিৎসা নেওয়া যায় বলে জানালেন বাংলাদেশ থেকে আগত অনেক রোগী। ঢাকার ধানমণ্ডি থেকে আগত জাহেদুর রহমান জানান, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে সাধারণত ব্যাংকক ও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু মালয়েশিয়ায় অনেক উন্নত চিকিৎসাসেবা রয়েছে। সিঙ্গাপুরের হাসপাতাল যে খরচের কথা বলেছে, সেটা আকাশছোঁয়া। আবার ব্যাংককের হাসপাতালগুলোর চেয়ে মালয়েশিয়ার চিকিৎসাসেবা সন্তোষজনক।   

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রশংসাপত্রসহ পেশাদার লোকের উপস্থিতি মালয়েশিয়ার চিকিৎসাসেবাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বলে জানালেন কেপিজে তাওয়াক্কাল স্পেশালিস্ট হসপিটালের হেলথ ট্যুরিজম কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ হাফিজ ওমর। কুয়ালালামপুর শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে এ হাসপাতাল। হাসপাতালের বারান্দা থেকেই দেখা যায় টুইন টাওয়ারের আলোকচ্ছটা। ১৯৮৪ সালে মাত্র ৬৬ বেড নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় কেপিজে তাওয়াক্কাল। বর্তমানে মালয়েশিয়ার অন্যতম সেবাকেন্দ্রে রূপ নিয়েছে কেপিজে গ্রুপ। হাসপাতালের করপোরেট এক্সিকিউটিভ জালিফা ইয়াসমিন বলেন, মালয়েশিয়ার ডাক্তাররা অত্যন্ত অভিজ্ঞ। বেশ কয়েকটি নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি ও গবেষণার সঙ্গে জড়িত হয়ে তারা অনেক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ায় বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ গড়ে উঠেছেন। মালয়েশিয়ার সব চিকিৎসা কেন্দ্র আধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত হওয়ায় চিকিৎসা নিতে বেশি সময় অপেক্ষার প্রয়োজন হয় না।  

সাম্প্রতিককালে ব্যাংকক ও সিঙ্গাপুরের তুলনায় মালয়েশিয়ার চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক এগিয়ে গেছে। এখানে চিকিৎসাসেবা নিতে আসাদের ব্যাপারে সরকার যথেষ্ট উদার মনোভাবের পরিচয় দিচ্ছে। এ ছাড়া সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও আরেকটি কারণ। মালয়েশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে গতিশীল অর্থনীতির একটিতে পরিণত হয়েছে। এখানে মালয়ে, চীনা ও ভারতীয়দের সমন্বয়ে বহু জাতির সমাজে সবাই একসঙ্গে শান্তিতে বসবাস করে। মালয়েশীয়রা শান্তিপ্রিয় ও বন্ধুবৎসল। এখানে আসা পর্যটকরা এখানকার মানুষের কাছ থেকে সম্মান পান এবং তাদের হাসিমুখে গ্রহণ করা হয়ে থাকে। এ ধারাবাহিকতায় বেড়ে চলেছে হেলথ ট্যুরিজমের নেটওয়ার্ক।

সর্বশেষ খবর