সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

ছাতকী কমলার নতুন ব্র্যান্ড মৌলভীবাজারে

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

ছাতকী কমলার নতুন ব্র্যান্ড মৌলভীবাজারে

বিলুপ্ত প্রায় ছাতকী কমলা নতুন ব্র্যান্ড নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে মৌলভীবাজারের পাহাড়ি অঞ্চলে। আমদানিকৃত বিদেশি কমলার পাশাপাশি দেশজ এ কমলা বাজারজাত হচ্ছে বিভিন্ন মোকামে। রসে ভরা এবং ঘ্রাণ সম্পন্ন ছাতকী কমলার চাহিদা রয়েছে আন্তর্জাতিক পরিসরে। জানা গেছে, প্রাকৃতিক বৈরীপনা, পাহাড় টিলা ধ্বংস করে স্থাপনা নির্মাণসহ বিকল্প চাষাবাদের কারণে ছাতক,  জৈন্তা, গোয়াইনঘাট ও বিয়ানীবাজার এলাকায় কমলা চাষাবাদে সূচিত হয় ভাটার টান। অন্যদিকে বিলুপ্ত প্রায় ছাতকী কমলার কাটিং ও চারা সংগ্রহ করে মৌলভীবাজারের পাহাড়ি এলাকায় কমলা চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয় বিক্ষিপ্তভাবে। মাটির গুণ ও পরিচর্যার অকৃপণতায় এখানে কমলা চাষের সম্ভাবনাময় দিগন্তের উন্মোচন ঘটে। কমলাচাষের প্রক্রিয়া ক্রমেই প্রসার লাভ করে বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়াতে। বর্তমানে জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ি, পূর্ব জুড়ী, ফুলতলা, সাগরনাল এবং জায়ফরনগরের ৯৮ হেক্টর টিলা ভূমিতে কমলার বাগান গড়ে উঠেছে। একইভাবে বড়লেখার দক্ষিণ শাহাবাজপুর, বড়লেখা সদর, দক্ষিণ ভাগ ও নিজ বাহাদুরপুর ইউনিয়নে ৭৮ হেক্টর এবং কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা, ভাটেরা ও পৃথিমপাশায় ১৩ হেক্টর জমিতে কমলা চাষাবাদ হচ্ছে। তিন উপজেলাতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ৩৮টিরও অধিক কমলাবাগান গজিয়ে উঠেছে। বিক্ষিপ্তভাবে কমলা ও মাল্টা চাষাবাদের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলাতে। এ মৌসুমে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠা কমলা বাগান থেকে কমলা বাজারজাত করা হচ্ছে স্থানীয় বাজারসহ অন্যান্য এলাকায়। সংশ্লিষ্টরা জানান, এবার কৃষি বিভাগ কমলার মোট উত্পাদন নির্ধারণ করেছিল ১.৮ টন। কিন্তু পুরান কমলা গাছে কমলা ধরেছে ৩০০টির অধিক। এ হিসাবে উত্পাদনের মাত্রা ২ টন ছাড়িয়ে যাবে। জুড়ীর গোয়ালবাড়ি এলাকার কমলা চাষি আজহার আলী জানান, এবার কমলার ফলন হয়েছে বেশি। ন্যায্য দামও পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি বলেন, কমলা চাষাবাদ হচ্ছে ধৈর্যের ব্যাপার। আমাদের চাষিরা ৪/৫ মাসের মাথায় ফসল পেতে আগ্রহী। কিন্তু কমলা গাছে ফল ধরে ৬/৭ বছর পর। তারপরও অনেকে কমলা চাষে এগিয়ে আসছেন। জানা গেছে, ২০০৫-২০০৬ অর্থ বছরে সরকারি উদ্যোগে হাতে নেওয়া হয়েছিল কমলা চাষ প্রকল্প। প্রকল্প অনুসারে বিনামূল্যে চাষীিদের চারা, সার ও কীটনাশক সরবরাহের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ঋণ বরাদ্দ করা হত। এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবার পর আর বাড়ানো হয়নি। চাষিরা এ ব্যাপারে দায়িত্বশীলদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সর্বশেষ খবর