বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

নির্বাচনী লাভ লোকসানে বিএনপি

মাহমুদ আজহার

দলীয় প্রতীকে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে হার-জিত দুটোতেই লাভ দেখছে বিএনপি। দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, মোটামুটিভাবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি ৮০ ভাগ পৌরসভায় বিজয়ী হবে। পরবর্তীতে এ বিজয় রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলার পক্ষে কাজ করবে। অন্যদিকে ‘ভোট ডাকাতি’ করে বিজয় ছিনিয়ে নিলেও লাভের হিসাব কষছে দলটি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন যে ‘ভোটবিহীন’ হয়েছে সেই বার্তা নতুন করে আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরতে পারবে। সেই প্রস্তুতি নিয়ে ইতিমধ্যে পৌর নির্বাচন মনিটরিংয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। নির্বাচনের সর্বশেষ পরিস্থিতি তারা দেশি-বিদেশি কূটনৈতিক মহলে তুলে ধরার ইচ্ছা রাখেন। সূত্র জানায়, ওই কমিটিতে রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এম ওসমান ফারুক, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। ইতিমধ্যেই তারা কাজ শুরু করে দিয়েছেন। নির্বাচনে যাওয়া প্রশ্নে দলের ইতিবাচক অবস্থান ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরা হয়েছে।

অবশ্য পৌর নির্বাচনকে ‘চ্যালেঞ্জ’ ঘোষণা করে নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত থাকার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে বিএনপির। নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে কূটনৈতিকসহ ১৭টি মনিটর সেলও তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সেলের দায়িত্বে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আহ্বায়ক ও যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। ঢাকা বিভাগের তিনটি সেলের একটিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আরেকটিতে স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য আ স ম হান্নান শাহ ও তৃতীয়টিতে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এম ওসমান ফারুককে আহ্বায়ক করা হয়েছে। সবগুলোতেই সদস্য সচিব করা হয়েছে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনকে। রাজশাহীতে একভাগে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আরেকভাগে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হককে আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উভয়স্থানে সদস্য সচিব করা হয়েছে সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশীদকে। তিন ভাগে চট্টগ্রামের একটিতে ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আরেকভাগে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন এবং তৃতীয় ভাগে উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রুহুল আলমকে (অব.) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিন স্থানেই সদস্য সচিব করা হয়েছে সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকারকে।

বরিশালে ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানকে আহ্বায়ক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবর রহমান সরোয়ারকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। সিলেটে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। খুলনায় স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। রংপুরে স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমানকে আহ্বায়ক ও সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। মিডিয়া সেলে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান খান দুদুকে আহ্বায়ক ও যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সেলে ড. মঈন খানকে আহ্বায়ক ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম হালিমকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। এ ছাড়া লিগ্যাল এইড সেলে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনকে আহ্বায়ক ও যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। এদিকে ঢাকার মনিটরিং সেলের দায়িত্বে থাকা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ গতকাল নারায়ণগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জের বেশ কয়েকটি পৌরসভায় দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পৌর নির্বাচনকে আমরা আন্দোলনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি। যদি সরকার এর ব্যত্যয় ঘটায় তাহলে এর দায়ভারও তাদেরই নিতে হবে। আমরা নির্বাচনে থাকতে চাই। সরকারকেই নির্বাচনে থাকার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।’

সর্বশেষ খবর