শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ভোট প্রার্থনায় স্বামী-স্ত্রী

লাকসাম প্রতিনিধি

ভোট প্রার্থনায় স্বামী-স্ত্রী

লাকসাম পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী অধ্যাপক আবুল খায়ের ও তার স্ত্রী একসঙ্গে ছুটছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। মেয়র প্রার্থী স্বামীর জন্য স্ত্রী মনোয়ারা সুলতানা মুন্নী ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে ভোট প্রার্থনা করছেন। আবুল খায়ের একটি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও তার স্ত্রী একটি বালিকা বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা। অধ্যাপক আবুল খায়ের বলেন, ‘সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রার্থী হয়েছি। নির্বাচিত হলে সন্ত্রাস, মাদকমুক্ত একটি মডেল পৌরসভা গড়ে তুলব।’ প্রার্থীর স্ত্রী মনোয়ারা সুলতানা জানান, ‘শুধু আমার স্বামী হিসেবে নয়, তিনি একজন ভালো মানুষ ও যোগ্য প্রার্থী। পৌর এলাকার উন্নয়নে এবং বঞ্চিত নারীদের অধিকার আদায়ে কাজ করবেন তাই তার জন্য ভোট প্রার্থনা করছি।’

কুমিল্লার পাঁচ মেয়র প্রার্থী অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন চট্টগ্রামে স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরোননি অনেকে : কুমিল্লার ছয় পৌরসভার মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে পাঁচজন অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। কলেজের গণ্ডি পেরোতে পারেননি চট্টগ্রামের ১০ পৌরসভার সিংহভাগ মেয়র প্রার্থী। এ-সংক্রান্ত পাঠানো রিপোর্ট— মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা : কুমিল্লার ছয় পৌরসভায় ২৭ জন মেয়র এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪৫ ও সাধারণ ওয়ার্ডে ২২৮ জন কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২৭ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজন অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন, তিনজন এসএসসি পাস করেননি, এমএ পাস করেছেন মাত্র চারজন। স্বশিক্ষিতদের মধ্যে আওয়ামী লীগের একজন, জাতীয় পার্টির একজন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দুজন ও স্বতন্ত্র একজন। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া প্রার্থীদের হলফনামা থেকে এ তথ্য জানা যায়।

চৌদ্দগ্রাম পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মিজানুর রহমান স্নাতক, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ইমাম হোসেন পাটোয়ারী এসএসসি ও বিএনপির প্রার্থী মুহম্মদ গোলাম রাব্বানী (নয়ন বাঙ্গালী) এমএসএস পাস করেছেন। লাকসামে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক আবুল খায়ের এমএ, বিএনপির শাহনাজ আক্তার বিএসএস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নূর মোহাম্মদ স্বশিক্ষিত। হোমনায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম এলএলবি, বিএনপির আলহাজ আবদুল লতিফ বিএসসি, বিএনপির বিদ্রোহী হানিফ মিয়া দশম শ্রেণি, বিএনপির বিদ্রোহী আলমগীর সরকার বিকম, জাতীয় পার্টির ইসমাইল হোসেন সিরাজী স্বশিক্ষিত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আবদুল হাকিম দাওরা হাদিস (এমএ) ও স্বতন্ত্র জহিরুল হক অষ্টম শ্রেণি পাস। চান্দিনায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মফিজুল ইসলাম স্বশিক্ষিত, বিএনপির শাহ্ মোহাম্মদ আলমগীর খান এইচএসসি ও স্বতন্ত্র আবদুল মান্নান সরকার স্বশিক্ষিত।

বরুড়া পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বাহাদুরুজ্জামান এইচএসসি, বিএনপির জসিম উদ্দিন পাটোয়ারী এইচএসসি, জাতীয় পার্টির আনু মিয়া মিয়াজী এমএ, ইসলামী ফ্রন্টের কবির হোসেন এসএসসি, তরীকত ফেডারেশনের আবুল কালাম আজাদ এসএসসি, জাসদ (ইনু) অজিতকুমার দত্ত দশম ও স্বতন্ত্র আরিফ হোসেন ভূইয়া বিএসএস।

দাউদকান্দি পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নাঈম ইউছুফ সেইন বিএসসি ইন কম্পিউটার সায়েন্স, বিএনপির কে এম আই খলিল এইচএসসি, বিএনপির বিদ্রোহী নুরুল আমিন সরকার এসএসসি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা জালাল উদ্দিন স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন।

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা কুমিল্লার সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজমুল আলম চৌধুরী নোমান বলেন, কম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে নির্বাচন করার বিষয়ে দেশে কোনো বিধিনিষেধ নেই। অনেক শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন লোকেরও দক্ষতা কম থাকে। তবে অধিকার আদায়ের নেতৃত্বে মনোনয়ন ও নির্বাচনে শিক্ষিতদের এগিয়ে দেওয়া উচিত।

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম : কলেজের গণ্ডি পেরোতে পারেননি চট্টগ্রামের ১০ পৌরসভার সিংহভাগ মেয়র প্রার্থী। তাদের মধ্যে মাত্র ১০ জন স্নাতক হলেও বাকিদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি কিংবা তার কম। এর মধ্যে স্বশিড়্গিত ও অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন মেয়র প্রার্থী রয়েছেন ১০ জন।

নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া প্রার্থীদের হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মিরসরাই পৌরসভার ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী আরিফ মাঈন উদ্দিন শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন অষ্টম শ্রেণি। বিএনপি প্রার্থী এ জেড এম রফিকুল ইসলাম পারভেজ এসএসসি ও আওয়ামী লীগের গিয়াস উদ্দিন বিএ পাস করেছেন। বারইয়ারহাট পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী মঈন উদ্দিন অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন এবং আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন এইচএসসি পাস। পটিয়ায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী তৌহিদুল আলম প্রযোজ্য নয় উল্লেখ করলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হারুনুর রশিদ এমকম এবং জাতীয় পার্টির শামসুল আলম ও স্বতন্ত্র মুহাম্মদ ইব্রাহিম শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন এসএসসি পাস। চন্দনাইশ পৌরসভার স্বতন্ত্র প্রার্থী জসিম উদ্দিন আহমেদ শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বশিক্ষিত উল্লেখ করলেও আওয়ামী লীগের মাহাবুবুল আলম শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন বিএ, ইসলামী ফ্রন্টের আবদুল হাকিম এমএ ও এলডিপির মো. আইয়ুব এইচএসসি। বাঁশখালী পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেলিমুল হকের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি আর বিএনপি কামরুল ইসলাম হোসাইনী বিএ। রাউজানে বিএনপির কাজী আবদুল্লাহ আল হাসান সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন এবং আওয়ামী লীগের দেবাশীষের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর মো. মনসুর আলম কামিল ও সাইফুল আলম চৌধুরী বিকম পাস। সীতাকুণ্ড পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদিউল আলম এইচএসসি, জামায়াতে ইসলামীর তৌহিদুল আলম বিএসসি, বিএনপির সৈয়দ আবুল মনসুর ও জাতীয় পার্টির নুরনবী ভুইয়া স্বশিক্ষিত, স্বতন্ত্র সিরাজ উদ দৌলা এবং শফিউল আলম অষ্টম শ্রেণি পাস। সন্দ্বীপের আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী জাফর উল্লা এইচএসসি আর বিএনপির আজমত আলী বাহাদুর বিএসসি পাস। সাতকানিয়ায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী জোবায়েরের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএ, জাতীয় পার্টির ইউসুফ চৌধুরী অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন এবং বিএনপির মেয়র প্রার্থী রফিকুল আলম স্বশিক্ষিত। রাঙ্গুনিয়ায় আওয়ামী লীগের শাহজাহান সিকদার বিএ, বিএনপির হেলাল উদ্দিন শাহ এসএসসি, ইসলামিক ফ্রন্টের আবদুর রহমান জামী হাফেজে কোরআন এবং স্বতন্ত্র মোজাম্মেল হক এইচএসসি পাস বলে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।

সর্বশেষ খবর