রবিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকুন

সেনাকর্মকর্তাদেও উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি

জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকুন

আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স সম্পন্নকারী কর্মকর্তাদের মাঝে গতকাল সনদ বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ যাতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনে সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় প্রতিরক্ষাবাহিনীকে আরও সক্ষম করে তোলার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। গতকাল মিরপুর সেনানিবাসে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স ও এএফডি কোর্সের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি সর্বজনীন ও বহুকেন্দ্রিক বিশ্বে বসবাস করছি যেখানে পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি পারস্পরিক সংযোগকে সুদৃঢ় করছে, উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের পথ দেখাচ্ছে আবার মাঝেমধ্যে প্রতিকূল পরিবেশও তৈরি করছে। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আজ যে একটি উন্নততর ও পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিশ্বে বসবাস করছি, সে বিশ্বও বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত কারণে সুরক্ষিত নয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর উন্নত বিশ্বের অনেক নিয়ম-নীতি প্রভাব ফেলে; যার ফলে উন্নত দেশের অনেক অভিঘাতের প্রতিই তারা থাকে সংবেদনশীল। তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিকে বহুমুখী ও শক্তিশালী করার জন্য নিজেদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করা প্রয়োজন। প্রতিরক্ষাবাহিনীর আধুনিকায়নে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, অনেক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে রাজনীতি, অর্থনীতি ও গণতন্ত্রের মূল লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী নিরাপত্তাজনিত অনেক সমস্যার সমাধানে সরকারের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও নানা ধরনের ঘটনা যেভাবে মাথাচড়া দিয়ে উঠছে তার প্রতিকারে আমি আশা করি এ প্রশিক্ষণ আপনারা কাজে লাগাবেন। নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগাবেন। যে কোনো কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় আপনারা অনেক বেশি সক্ষম হবেন। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর জনগণের পাশে থাকার বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে এ অংশীদারিত্ব সময়ের পরিক্রমায় আরও শক্তি সঞ্চয় করবে। আমি বিশ্বাস করি সশস্ত্র বাহিনী তার উদ্যোগ, দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখে চলবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ভোগোলিক অবস্থান রাষ্ট্রের কৌশলগত গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং সংহতি উন্নয়নে বাংলাদেশের তাত্পর্যপূর্ণ ভূমিকার গুরুত্বও তুলে ধরেন তিনি। এনডিসিতে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ ও বেসামরিক প্রশাসনের ৫১ জন এবং চীন, ভারত, মিসর, মিয়ানমার, ওমান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ সুদান, শ্রীলঙ্কা, সৌদি আরব, তানজানিয়া ও যুক্তরাজ্যের ২৫ জন অংশ নেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হোসেন তৌফিক ইমাম, মসিউর রহমান, গওহর রিজভী, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুবিদ আলী ভুইয়া ও তিন বাহিনীর প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট লে. জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ারদী বিবি, এসবিপি, এনডিসি, পিএসসি তার স্বাগত বক্তব্যে সফলতার সঙ্গে কোর্স সম্পন্ন করার জন্য কোর্সে অংশগ্রহণকারী সব দেশি ও বিদেশি কোর্স সদস্য ও কোর্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব ফ্যাকাল্টি সদস্য ও স্টাফ অফিসারদের অভিনন্দন জানান।

সর্বশেষ খবর