সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
ব্র্যাকের গবেষণা প্রতিবেদন

সুশাসনের ঘাটতিতে উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রশাসনের সব ক্ষেত্রে সুশাসনের ঘাটতির কারণে উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। রাজনীতিতে ব্যবসায়ীদের আধিপত্য সুশাসনের অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে। গত ১০ বছরে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে। তবে প্রশাসনে রাজনীতিকরণের কারণে অগ্রগতি অনেকাংশেই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রাজনৈতিক উন্নয়ন সূচক অনেক নিচে। গতকাল রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে দি স্টেট অব গভর্ন্যান্স শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। ব্র্যাক ইনস্টিটিউট গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সংবাদ সম্মেলনে বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. সুলতান হাফিজ রহমান, সিনিয়র রিসার্স অ্যাসোসিয়েটস সেলিনা আজিজ, রিসার্স অ্যাসোসিয়েটস হারুনুর রশিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস, নির্বাচন কমিশনের ওপর অনাস্থা, কমিশনের  যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে নির্বাচনের পর সংসদে শিক্ষা ও আইন বিষয়ের রাজনীতিবিদের তুলনায় ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে সংসদে ব্যবসায়ীদের অবস্থান রয়েছে ৬০ শতাংশ। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, রাজনীতিবিদদের হাতে যথেষ্ট পরিমাণে নির্বাচনের খরচ না থাকায় ব্যবসায়ীরা এগিয়ে আসছেন। যা সার্বিক সুশাসনে বাধা সৃষ্টি করছে। প্রশাসনের বিভিন্ন খাত ভিত্তিক গবেষণায় দেখানো হয়েছে, দেশের ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির অন্যতম কারণ এর নিয়োগ পদ্ধতি। আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। ফলে ঋণ প্রদানে এসব ব্যক্তি দিনের পর দিন অনিয়ম করছে। এতে খেলাপিসহ ঋণ অবসায়ন বাড়ছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় এর প্রভাবে সরকারকে প্রতিবছর তহবিল জোগান দিতে হচ্ছে। গত ১০ বছরের ব্যবধানে ব্যাংকিং খাতের সুশাসনে তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। সরকারি ব্যাংকগুলো দেউলিয়ার পথে যাচ্ছে।  শিক্ষা খাতের বিষয়ে বলা হয়, শিক্ষা খাতের ব্যাপকতা গত ১০ বছরে ২৩০০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে শিক্ষার মান বাড়েনি। ২০০৪ সালে ২০ শিক্ষার্থী জিপিএ ৫  পেয়েছে। আর তা বেড়ে ২০১৩ সালে দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ৫৩০ জনে। যা ২০০৪ সালের তুলনায় ২৩৭৬ গুণ বেশি। কিন্তু সর্বশেষ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ে কেবল দুজন ছাত্র যোগ্যতা অর্জন করেছে। সর্বশেষ তিন বছর যথাক্রমে ৫১, ৫২ এবং ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করছেন।  উদ্বোধনী বক্তৃতায় ড. সুলতান হাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের প্রতিবেদনটি ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময় ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে চারটি খাতের শাসন ব্যবস্থাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দেশের অর্থনীতি অগ্রসর হলেও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোগত উন্নয়নে পিছিয়ে রয়েছে। সুতরাং এ বিষয়ে চিন্তিত। এ জন্য সরকারকে কাঠামোগতভাবে এগোতে হবে।

সর্বশেষ খবর