বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাঘিনী জ্যোতি ফের মা হলো

মোস্তফা কাজল

বাঘিনী জ্যোতি ফের মা হলো

বাঘিনী জ্যোতি আবার মা হলো। ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানায় নতুন অতিথির আগমনে বইছে আনন্দের বন্যা। গতকাল ভোরে ফুটফুটে বাঘ শাবকের জন্ম দিয়েছে জ্যোতি। ২০১২ সালের ১২ জুন রাজধানীর শ্যামলীর একটি বাসা থেকে সুন্দরবন থেকে পাচার হওয়া জয়, যূথী ও জ্যোতি নামের তিন বাঘ শাবক উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর আদালতের নির্দেশে রাজধানীর ২২/২ হাতিরপুলের ফিকামলি সেন্টারের মালিক ও বাঘবিশেষজ্ঞ ড. আবদুল ওয়াদুদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। এখানে কয়েক দিন থাকার পর কক্সবাজারের ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় দেড় বছর আগে জ্যোতিকে জাতীয় চিড়িয়াখানায় ফিরিয়ে আনা হয়। এখানে আসার পর অন্য একটি বাঘের সঙ্গে জ্যোতিকে একই খাঁচায় রাখা হয়। এরপর গর্ভধারণ করে জ্যোতি। গর্ভধারণের পর চলতি বছরের ২৬ আগস্ট বাঘ শাবক টোকিওর জন্ম দেয়। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয়বার গর্ভধারণের জন্য জ্যোতিকে অন্য খাঁচায় রাখা হয়। সেখানে আবার গর্ভধারণ করে। এ ব্যাপারে চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চিড়িয়াখানা এখন বাঘ প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। জ্যোতির মা হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে আরও বলেন, বাঘ শাবক নিয়ে সুস্থ আছে জ্যোতি। বাঘবিশেষজ্ঞ ড. আবদুল ওয়াদুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জ্যোতিকে এখন আলাদাভাবে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার। নইলে অঘটন ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। গতকাল চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা যায়, মা জ্যোতির চারদিকে সতর্ক দৃষ্টি। সন্তানকে নিয়ে খাঁচার ভিতরের এক প্রকোষ্ঠে অবস্থান করছে। এ ছাড়া পরম সুখে শাবককে দুধ খাওয়াতে দেখা গেছে। চিড়িয়াখানার পুষ্টি কর্মকর্তা আবু সাঈদ কামাল বাচ্চু বলেন, এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারাই বাঘিনী ও বাঘ শাবকের দেখভাল করছেন। বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবন অঞ্চলে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বসবাস। বাঘের আটটি গোত্রের মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার সর্বাধিক স্বাতন্ত্র্যের অধিকারী। গায়ে হলুদের ওপর ডোরা কাটা কালো দাগ এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য। পুরুষ বাঘের দৈর্ঘ্য ৩ মিটার এবং স্ত্রী বাঘের আড়াই মিটার হয়। এদের গড় ওজন ১৮০ থেকে ২৪০ কেজি হয়। শরীর সুগঠিত ও শক্তিশালী। এরা মাংসাশী এবং ভয়ানক হিংস । ভালো সাঁতার কাটতে পারে। রয়েল বেঙ্গল টাইগার উভচর প্রাণীর মতো জীবনযাপন করে। বন্যপ্রাণী হরিণ, মহিষ, বনগরু, নীল গাই, শজারু, হাতি, এমনকি মাছ পর্যন্ত শিকার করে। এ প্রাণী সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত শিকারে ব্যস্ত থাকে। সাড়ে তিন বছর থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বয়ঃপ্রাপ্ত হয়। গর্ভধারণের ১৫-১৬ সপ্তাহ পর দুই থেকে চারটি বাচ্চা দেয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর