শনিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

পাহাড়ে অতিথি পাখির অভয়াশ্রম

মো. জহুরুল আলম, খাগড়াছড়ি

পাহাড়ে অতিথি পাখির অভয়াশ্রম

পাহাড়ে অতিথি পাখির অভয়াশ্রম। খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলা সদরের বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ-২০ (বিজিবি) ক্যাম্পের লেক ও বাগানে নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে অভয়াশ্রম গড়ে তুলেছে অতিথি পাখিরা। প্রতি বছর শীতের পৌষ মাসেই পানছড়িতে আগমন ঘটে অতিথি পাখির। শিশির ভেজা ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই পাখিদের কলকাকলিতে ঘুম ভাঙে ২০ বিজিবি ও আশপাশ এলাকার মানুষের। সাত সকালেই খাবারের সন্ধানে নীল আকাশে ডানা মেলে উড়তে শুরু করে সাদা বকের দল, কালো রঙের পানকৌড়ি ও নানা জাতের শালিকসহ নাম না জানা অনেক অতিথি পাখি। সন্ধ্যা হওয়ার আগেই ফিরে আসে ২০ বিজিবির নিরাপদ আশ্রয়ে। এসব পাখিদের কিচির-মিচির ডাক ও ডানা মেলে উড়ে বেড়ানোর  মনোরম দৃশ্য যে কাউকেই মুগ্ধ করে।  শীত আসলেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অতিথি হয়ে এখানে আসে কয়েক হাজার বিভিন্ন প্রজাতির সাদা বক। কোনো সীমান্তই তাদের আটকে রাখতে পারে না। শীতের আগমনী বার্তা লগ্নেই আকাশ পথে ডানা মেলে আপন ভুবনে ভাসতে ভাসতে আসা সাদা বক বিজিবির গাছ-গাছালিকে বানিয়ে নেয় নিজ আবাসস্থল। হাজারো অতিথি পাখির মধ্যে সাদা বকের সমাগমই সব চাইতে বেশি। সঙ্গে রয়েছে কিছু কিছু কালো রঙের পানকৌড়ি ও বিভিন্ন প্রজাতির শালিক। এসব অতিথি পাখিদের কিচির-মিচির ও শোঁ-শোঁ শব্দ যেন পুরো এলাকাকে মাতিয়ে তোলে। বড় বড় গাছের প্রতিটি সবুজ পাতায় সাদা বকের অবস্থান পুরো বাগানটিই যেন সাদা বকের মেলায় রূপ নিয়েছে। সন্ধ্যা হওয়ার আগে থেকেই ঝাঁকে ঝাঁকে বকের পাল, পানকৌড়ি, শালিকেরা সারি বেঁধে ছুটে আসে বিজিবির লেক ও বাগানে। এই অতিথিদের উড়ে আসার দৃষ্টিনন্দন ও মনমাতানো দৃশ্য একবার দেখলে মনে দাগ কাটে যে কারোরই। ২০ বিজিবি সূত্রে জানা যায়, সাত সকালেই বকের পাল এলাকার বিভিন্ন খালে-বিলে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে। কিন্তু শালিকদের কলকাকলিতে ২০ বিজিবি থাকে মুখরিত। শালিকরা অবাধেই নির্ভয়ে বিচরণ করে বেড়ায় বিজিবির আশপাশ এলাকায়। পানছড়ির এলাকাবাসী জানান, আগে এলাকার কিছু কিছু বাঁশঝাড়ে অতিথি বকসহ নানা প্রজাতির পাখির আগমন ঘটত। পাখি শিকারিদের অত্যাচারে তা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে এরা বিজিবির ক্যাম্পে শতভাগ নিরাপদেই অভয়াশ্রম গড়ে তুলেছে।

সর্বশেষ খবর