সোমবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
বিশ্ব ইজতেমা শেষ

আখেরি মোনাজাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা

মোস্তফা কাজল ও খায়রুল ইসলাম, টঙ্গী থেকে ফিরে

আখেরি মোনাজাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা

দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে গতকাল শেষ হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। টঙ্গীর তুরাগ তীর থেকে তোলা ছবি —বাংলাদেশ প্রতিদিন

দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি, উন্নতি এবং কল্যাণ কামনা করে গতকাল অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব ইজতেমা। আর আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ৫১তম বিশ্ব ইজতেমার তিন দিনব্যাপী দ্বিতীয় পর্ব। বেলা ১১টা ৪ মিনিটে মোনাজাত শুরু হয় যা শেষ হয় ১১টা ৩৩ মিনিটে। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন তাবলিগ জামাতের মারকাজের শুরা সদস্য ও দিল্লির শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা মুহাম্মদ সা’দ। মোনাজাতের আগে হেদায়েতি বয়ান  করেন তিনি। মাওলানা সা’দ-এর সঙ্গে লাখ লাখ মুসল্লি দুই হাত তুলে দোয়ায় অংশ নেন। টঙ্গীর তুরাগ তীরে সমগ্র ইজতেমাস্থল ও আশপাশ এলাকা লাখো মুসল্লির ‘আমিন, আল্লাহুমা আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনা মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করার জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রহমত প্রার্থনা করা হয়। মাঠ, রাজপথ, ঘরবাড়ির ছাদ, তুরাগের দুই তীর, কিনারে ভিড়ে থাকা নৌকা, পথে দাঁড়িয়ে থাকা যানবাহনে বসে কিংবা দাঁড়িয়ে দুই হাত তুলে কাতরস্বরে মহান আল্লাহর কাছে মিনতি করে ধর্মপ্রাাণ অগণিত নারী-পুরুষ। সকালে কুয়াশার মধ্যে আখেরি মোনাজাতে শরিক হতে ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলো থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি তুরাগ তীরে জমায়েত হন। মোনাজাত উপলক্ষে অনেকেই আগের দিন শনিবার রাত ও এর আগে থেকেই ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নিয়ে চটের শামিয়ানার নিচে সমবেত হন। বিশাল ময়দান ভরে যাওয়ায় আশপাশের অলিগলি ও রাস্তায় পাটি, খবরের কাগজ, পলিথিন, সিমেন্টের বস্তা বিছিয়ে সড়ক-মহাসড়কেই বসে পড়েন। এ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বাসাবাড়ি, কলকারখানা-অফিসে, যানবাহনের ছাদে ও তুরাগ নদে নৌকায় মুসল্লিরা অবস্থান নেন। ইজতেমাস্থলে পৌঁছাতে না পেরে হাজার হাজার মানুষ আশুলিয়া-কামারপাড়া সড়ক, ঢাকা-কালীগঞ্জ সড়ক ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেন। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে ইজতেমাস্থল ও চারপাশের প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যান চলাচলে আগেই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। পুলিশ সুপার হারুনুর রশিদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৩০টি শাটল বাস চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোনাজাত উপলক্ষে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, ঢাকা-কালীগঞ্জ সড়ক বন্ধ রাখায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ ছাড়া গণযোগাযোগ অধিদফতর ইজতেমা ময়দান থেকে আবদুল্লাহপুর ও বিমানবন্দর রোড পর্যন্ত এবং গাজীপুর জেলা তথ্য অফিস ইজতেমা ময়দান থেকে চেরাগ আলী, টঙ্গী রেলস্টেশন, স্টেশন রোড ও আশপাশের অলিগলিতে পর্যাপ্ত মাইক সংযোগের ব্যবস্থা করে। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে রেলওয়ে আখাউড়া, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন রুটে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে। এর আগে ১০ জানুয়ারি ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হয়। এ দুই পর্বে অংশ নেন ৩২ জেলার মুসল্লিরা। এর বাইরে দেশের বাকি ৩২টি জেলার মানুষ আগামী বছর দুই পর্বে ইজতেমায় অংশ নেবেন। আর এবারের পর্বে যারা অংশ নিয়েছেন তারা আবার ২০১৮ সালের ইজতেমায় অংশ নেবেন।

সর্বশেষ খবর