শিরোনাম
সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

এসডিজি পূরণে সাফল্য অভাবনীয়

——— প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) পূরণে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা অতি দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে নামিয়ে এনেছি। শহর এবং গ্রামীণ উভয় অঞ্চলেই আমরা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পানি সরবরাহ এবং পয়ঃসেবার মতো মৌলিক বিষয়ে অধিকতর সুবিধা নিশ্চিত করেছি। তিনি বলেন, বিশ্বমন্দা সত্ত্বেও গত ৭ বছর ধরে আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের উপর ছিল। গত এক দশকে আমাদের রপ্তানি আয় ৩ গুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে প্রায় ৮ গুণেরও কাছাকাছি। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘সাউথ এশিয়ান স্পিকারস সামিটের’ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। সম্মেলনের যৌথ আয়োজক ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের মান অনুযায়ী গত বছর বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। তবে আমরা নিম্ন থাকতে চাই না। আমরা এখন ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য আমি দক্ষিণ এশিয়ার পার্লামেন্টগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি গড়ে তোলার ওপর জোর দিতে চাই। তিনি গণতন্ত্রের প্রধান প্রতিষ্ঠান হিসেবে এসডিজি বাস্তবায়নে পার্লামেন্টের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, জাতীয় পর‌্যায়ে এসডিজি লক্ষ্যকে সমন্বিতভাবে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এবং এর কার্যক্রম মনিটর করার জন্য বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, ২০৩০ এজেন্ডা হচ্ছে একটি সম্মিলিত পথ-পরিক্রমা। এর বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের সরকারি এবং বেসরকারি, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক, সব উৎস থেকে অধিক পরিমাণে সম্পদের সরবরাহ প্রয়োজন। তিনি বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার যেমন— নারী-পুরুষ, নাগরিক সমাজ, কমিউনিটি এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, যুবসমাজ ইত্যাদির সঙ্গে অংশীদারিত্ব, আলোচনা এবং সহযোগিতার মাধ্যমে এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার পার্লামেন্টগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রধানমন্ত্রী এসডিজির পূর্ণ বাস্তবায়নে বিভিন্ন দেশের স্পিকার এবং এমপিদের প্রয়োজনীয় বাজেট অনুমোদনেরও উদাত্ত আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে তামাকের ব্যবহার মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো যেমন- বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান, মিয়ানমার এবং শ্রীলঙ্কায় তামাক-গ্রহণকারীর মোট সংখ্যা প্রায় ৩৮৩ মিলিয়ন। এটা বিশ্বের মোট ১ দশমিক ১ বিলিয়ন তামাকগ্রহণকারীর সংখ্যার ৩৪ দশমিক ৮ শতাংশ অর্থাত্ প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। এসব দেশে তামাকজনিত আর্থিক এবং স্বাস্থ্যগত ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার সরকার জনস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কনভেনশন ‘এফসিটিসি’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে আমরা ২০১৩ সালে ধূমপান এবং তামাক জাতীয় পণ্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন সংশোধন করেছি এবং ২০১৫ সালে সংশ্লিষ্ট বিধি পাস করেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন এবং সুস্বাস্থ্যের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিদ্যমান। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তামাকজনিত রোগ-বালাই এবং অসংক্রামক রোগের অব্যাহত প্রকোপ হ্র্রাসে এ অঞ্চলের এবং এর বাইরের সংসদকে এসডিজি-৩-তে বর্ণিত সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে তাদের আরও তত্পর হতে হবে। এসব রোগের ব্যাপকতা আমাদের দেশে ক্রমাগত বাড়ছে। আইপিইউ সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপির সভাপতিত্বে সামিটে অংশ নেন ভারতের লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) চেয়ারপারসন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার থিলাঙ্গা সুমাথিপলা, আফগানিস্তানের ওলেসি জিগরার স্পিকার আবদুর রউফ ইব্রাহিম, ভুটানের জাতীয় সংসদ সংগুর স্পিকার জিগমে জাংপো, মালদ্বীপের মজলিসের স্পিকার আবদুল্লাহ মাসেহ মোহামেদ। আইপিইউ সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী অনুষ্ঠানে সম্মেলনের ঢাকা ঘোষণা পড়ে শোনান।

সর্বশেষ খবর