মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

শেরপুরের জঙ্গলে অস্ত্র-গুলি

র্যা বের অভিযানে উদ্ধার বিমানবিধ্বংসী মেশিনগানসহ ৪৯ হাজার গোলাবারুদ

শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরের জঙ্গলে অস্ত্র-গুলি

নালিতাবাড়ী সীমান্তের দুর্গম পাহাড় থেকে উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্র —বাংলাদেশ প্রতিদিন

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গহিন অরণ্যে অভিযান চালিয়ে র‌্যাব বিপুল অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে। গতকাল সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এ অভিযান চালায় র‌্যাব-৫। এসব অস্ত্র ও গুলি মাটির নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাবের পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) কমান্ডার মুহাম্মদ মুফতি মাহমুদ খান জানান, গতকাল সকাল ৮টা থেকে র‌্যাব হেডকোয়ার্টার ও র‌্যাব-৫ (রাজশাহী অঞ্চলের) একটি বিশেষ দল গারো পাহাড়ের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা চেংবেড় কালাপানি এলাকায় অভিযান চালিয়ে গহিন অরণ্যের মাটির নিচ থেকে ওই গুলি উদ্ধার করে। এর মধ্যে রয়েছে একে ৪৭ একটি, বিমানবিধ্বংসী মেশিনগান একটি, স্নাইপার রাইফেল দুটি। হেভি মেশিনগান দুটি, এসএলআর দুটি, পিস্তল দুটি, মেশিনগানের গুলি ২২ হাজার, ১৭ হাজার শটগানের গুলি ও বিমানবিধ্বংসী গোলা ২ হাজারসহ অন্যান্য সাড়ে ৪ হাজার গোলা, স্যাটেলাইট ফোন পাঁচটি, এইচএফ সেট দুটি, ব্যারেল পাঁচটি, বিমানবিধ্বংসী ব্যারেল দুটি, বিপুল পরিমাণ ওয়াকিটকি এবং মেশিনগানের ড্রাম উদ্ধার করা হয়েছে। সব অস্ত্রই প্লাস্টিক প্যাকেটে ভর্তি অবস্থায় মাটির নিচে ছিল। অভিযান আপাতত বন্ধ থাকলেও পরে চলবে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, কয়েকদিন আগে র‌্যাব-৫ রাজশাহী অঞ্চল থেকে চারজনকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কালাপানি এলাকায় অভিযান চালানো হয়। তবে র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সারা দেশে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের অংশ হিসেবে এখানে অভিযান চালানো হয়েছিল। সূত্র জানিয়েছে, এখান থেকে আরও অনেক কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উদ্ধার অঞ্চলে জনগণের চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। ৫০-৬০ জন র‌্যাব সদস্য ও র‌্যাব হেডকোয়ার্টারের বেশ কিছু অফিসার অভিযানে অংশ নেন। এসব অস্ত্রশস্ত্র কোত্থেকে এলো তা জানা যায়নি। নালিতাবাড়ী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা বদিউজ্জামান বাদশা জানিয়েছেন, ’৭৫-এর পর এ এলাকায় ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার তত্পরতা ছিল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে উলফার ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকলে এবং ওই সংগঠনের বেশ কিছু শীর্ষস্থানীয় নেতা গ্রেফতার হলে উলফা তাদের গোলবারুদ মাটির নিচে পুঁতে রেখে পালিয়ে যায়। আমার ধারণা, র‌্যাবের উদ্ধারকৃত গোলাবারুদ উলফার হতে পারে। নালিতাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান মুখলেছুর রহমান রিপন বিপুল গোলাবারুদ উদ্ধারে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, এগুলো উলফার হতে পারে। উল্লেখ্য, ২০১০ সালে শেরপুরের অন্য সীমান্ত উপজেলা ঝিনাইগাতীর বাকাকুড়া গুচ্ছগ্রাম থেকে ১৩ হাজার রাইফেলের গুলি এবং ২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ওই উপজেলার সীমান্ত থেকে অন্তত ৫০ হাজার গুলি, রকেট লঞ্চার, মাইন ও বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ২০১২ সালে নালিতাবাড়ী সীমান্ত থেকে উদ্ধার করা হয় একে-৪৭। এ সময় বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব গোলাবারুদ আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার।

সর্বশেষ খবর