শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

চার মাস পর সেই পচা গম নিয়ে মংলা ছাড়ল জাহাজ পিনটেল

চট্টগ্রামে খালাস ৩২ হাজার টন নিয়ে বিপত্তি

বাগেরহাট প্রতিনিধি

দীর্ঘ চার মাস দেনদরবারে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে পচা গম নিয়ে সাইপ্রাসের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি পিনটেল গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় মংলা বন্দর ত্যাগ করেছে। প্রায় ২১ হাজার মেট্রিক টন গম নিয়ে জাহাজটি গত বছরের ১২ অক্টোবর মংলা বন্দরে আসে। পোকাযুক্ত পচা ও খাবার অনুপযোগী হওয়ায় আমদানিকৃত ওই গম খালাস বন্ধ করে দেয় খাদ্য অধিদফতর। গম খালাসের বিষয়ে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ইমপেক্স কনসালট্যান্ট প্রা. লি. ও খাদ্য অধিদফতরের মধ্যে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে দফায় দফায় চলা বৈঠকে পচা এ গম ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতেই জাহাজটি ফ্রান্সের রোয়েন ডাকিং বন্দরের উদ্দেশে বন্দর ত্যাগ করেছে। ফেরত যাওয়া এ গমের মূল্য প্রায় ৪৪ কোটি টাকা। মংলা বন্দরের হারবার বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হওয়া ৩১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন পোকাযুক্ত পচা ও খাবার অনুপযোগী গম নিয়ে বিপাকে পড়েছে খাদ্য অধিদফতর। এর একটি সিংহ অংশ ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে গেছে বলেও সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে। মংলা বন্দরের হারবার বিভাগের কর্মকর্তা মো. শাজাহান জানান, ঠিকাদারের মাধ্যমে খাদ্য বিভাগের জন্য প্রায় ৫২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন গম নিয়ে ফ্রান্স থেকে সাইপ্রাসের পতাকাবাহী জাহাজ পিনটেল গত বছরের ১ এপ্রিল চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। এপ্রিলের মাঝামাঝি জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে ভেড়ে। সেখানে প্রায় ৩১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন গম খালাস করে বাকি ২১ হাজার টন নিয়ে মংলা বন্দরে আসার পর নিম্নমানের হওয়ায় সে গম খালাস বন্ধ করে দেয় খাদ্য অধিদফতর। স্থানীয় লিপ্পন শিপিং এজেন্টের ম্যানেজার মো. আবদুর রহিম জানান, ফ্রান্স থেকে জাহাজটিতে ৫২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন গম আমদানি করা হয়েছিল। চট্টগ্রাম বন্দরে ৩১ হাজার ৫০০ টন গম খালাসের পর বাকি ২১ হাজার টন নিয়ে জাহাজটি গত ১২ অক্টোবর মংলা বন্দরে আসে। বন্দর চ্যানেলের হারবারিয়ায় নোঙর করার পর গম খালাসের জন্য একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ করা হয়। ১৩ অক্টোবর আমদানিকৃত গম খালাস তদারকি কমিটি জাহাজের গম পরিদর্শন করে তা খালাস না করার সিদ্ধান্ত নেয়। আমদানিকৃত ওই গমের গুণগতমান নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠে। পরে খাদ্য বিভাগসহ উচ্চ মহলের নির্দেশে নমুনা সংগ্রহ করে গম পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। খাদ্য অধিদফতর এ গম নিম্নমানের ও খাবার অনুপযোগী হওয়ায় তা খালাস না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এ সিদ্ধান্ত আমদানিকারক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইমপেক্স কনসালট্যান্ট লিমিটেডকে জানানো হলেও রহস্যজনক কারণে জাহাজটি এ পর্যন্ত বন্দরে পড়ে ছিল। খাদ্য অধিদফতর সূত্র জানায়, গম আমদানির জন্য ঠিকাদারি ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল গত বছরের ২৪ মার্চ। আর ফ্রান্স থেকে এ গম জাহাজে ভরা হয়েছিল ওই বছরের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে।

সর্বশেষ খবর