শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি ইন্টারকন্টিনেন্টালের কাজ

জুলাইয়ের মধ্যে কাজ শেষের তাগিদ

নিজামুল হক বিপুল

চলতি বছরের ডিসেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক একটি সম্মেলন। সেখানে থাকবেন অন্তত ৫০-৬০ দেশের মন্ত্রী ও মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিরা। সেই অনুষ্ঠানের অফিশিয়াল হোটেল হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালকে (রূপসী বাংলা)। কিন্তু হোটেলটির রিন্যুভেশনের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত আন্তর্জাতিক এই সম্মেলন অনেকটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক এই সামিটকে সামনে রেখে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে হোটেলের রিন্যুভেশনের কাজ শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ইতিমধ্যে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দিয়েছে পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। কিন্তু সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা চলতি বছর তো দূরের কথা আগামী বছরের জুনের মধ্যেও পুরো কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না।

চেইন  হোটেল শেরাটনের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের পর পাঁচতারকা এই হোটেলটি পরিচালনার জন্য ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সঙ্গে চুক্তি হয় বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের (বিএসএল)। এর আগে দুই বছর রূপসী বাংলা নামে হোটেলটি পরিচালনা করে বিএসএল। এরপর ইন্টারকন্টিনেন্টালের সঙ্গে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে হোটেলের রিন্যুভেশন বা সংস্কারকাজ শুরু হয়। ১৬ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার শর্তে তিনটি প্রতিষ্ঠান পৃথক পৃথক প্যাকেজে কাজ পায়। চুক্তি অনুযায়ী গত ডিসেম্বরের মধ্যেই সংস্কারকাজ সম্পন্নের কথা ছিল। আর গত মাসেই (জানুয়ারি) এটি উদ্বোধনের কথা ছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরে ঢাকাতে অনুষ্ঠিত হবে নবম গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (জিএফএমডি) সামিট। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বড় আন্তর্জাতিক সামিট। এতে বিশ্বের অন্তত ৫০ থেকে ৬০টি দেশের মন্ত্রী ও মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। এর বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধি, সিভিল সোসাইটি ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধি মিলিয়ে প্রায় ৯০০ প্রতিনিধি অংশ নেবেন। এই সম্মেলনের অফিশিয়াল হোটেল হচ্ছে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল। কিন্তু হোটেলের সংস্কারকাজ শেষ না হওয়ায় অনিয়শ্চতা দেখা দিয়েছে ওই সামিট নিয়ে। আগামী জুনের মধ্যে হোটেলের সংস্কারকাজ শেষ করতে গত ২৭ ডিসেম্বর বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরীকে চিঠি দিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার মো. ইফতেখার হায়দার। চিঠিতে তারা সামিটের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়ে লিখেছেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই অনুষ্ঠিত হবে জিএফএমডি সামিট। তাই আগামী জুলাই মাসের মধ্যে সংস্কারকাজ পুরোপুরি শেষ করা জরুরি। আগামী আগস্টের মধ্যে হোটেলটি পুরোপুরি প্রস্তুত করার আহ্বান জানিয়ে দুই সচিবই লিখেছেন, যাতে আগামী অক্টোবর থেকে হোটেলটি ব্যবহার করা যায়। এদিকে দুই সচিবের চিঠি পাওয়ার পর বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত ৭ জানুয়ারি একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে বিএসএল-এর এমডিকে। ওই চিঠিতে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের কাজ শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়। সূত্র জানায়, হোটেলের কাজ বলতে গেলে পুরোটাই এখনো বাকি। শুধু বাইরের দিকে হোটেলের গ্লাস ফিটিং হচ্ছে। এই কাজের গতিও খুব ধীর। আর ভিতরের সব কাজই বাকি। ভিতরের বিভিন্ন কক্ষের মধ্যে পার্টিশন বা দেয়াল নির্মাণ, পানির লাইন, বিদ্যুতের লাইন, এসির লাইন, ফ্লোরে টাইলস বসানো, রুম ফিটিং ও ইনটেরিয়রের কাজ এখনো শুরুই হয়নি। জানা গেছে, রুম ফিটিংসের জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছুই আনা হচ্ছে দেশের বাইরে থেকে। তবে এখনো আসেনি। কবে আসবে তাও কেউ জানে না।

সর্বশেষ খবর