বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

মুন্সীগঞ্জে খাল দখলে মহোৎসব

লাবলু মোল্লা, মুন্সীগঞ্জ

মুন্সীগঞ্জে খাল দখলে মহোৎসব

অত্যন্ত দ্রুতগতিতে পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে চলায় জেলার সর্বত্র উৎসবের আমেজ বইছে। অন্যদিকে জেলার শ্রীনগরের জমির দাম বেড়ে গেছে বহুগুণ। এ সুযোগে কিছু লোভী লোক সরকারি খাস ও অর্পিত সম্পত্তি দখলের পাশাপাশি খাল দখলের বেপরোয়া প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছেন। শ্রীনগর উপজেলার অধিকাংশ খাল এখন তাদের দখলে। তারা সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে দখলের মহোৎসবে নেমে পড়েছেন। দখলদারদের কবলে পড়ে নাব্য হারিয়ে  যেতে বসেছে শ্রীনগর গোয়ালীমান্দ্রা খালের। অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে দেউলভোগ হরপাড়া খাল ও গড়িয়াভাঙ্গা ধোপাবাড়ীর খাল। উপজেলা সদরের দুই কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত এসব খালের দুই পাশের সরকারি জায়গা দখল করে প্রভাবশালীরা পাকা বাড়িঘর ও দোকানপাট নির্মাণ করছেন। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব ঘটলেও তারা না দেখার ভান করে নিজেরা কোটিপতি বনে যাচ্ছেন। এতে একদিকে পরিবেশ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হচ্ছে, অন্যদিকে বেহাত হয়ে যাচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। ব্রিটিশ আমলে পশ্চিম বিক্রমপুরের শ্রীনগর বাজার ঘেঁষে বয়ে যাওয়া বর্তমান গোয়ালীমান্দ্রা শ্রীনগর খালটি ছিল পদ্মা-ধলেশ্বরীর সংযোগ রক্ষাকারী। এ খালটি নদীসদৃশ ছিল বলে একে পদ্মার শাখা নদীও বলা হতো। তখন এ নদী দিয়ে বড় বড় লঞ্চ, বেপারিদের হাজার মণের নৌকা আর মালবাহী নৌযান চলাচল করত। এ ছাড়া বোরো মৌসুমে গোয়ালীমান্দ্রা থেকে আড়িয়াল বিলের আলমপুর পর্যন্ত দুই পাশের প্রায় ৭৫ হাজার একর ধানি জমিতে পাওয়ার পাম্পের মাধ্যমে সেচ দেওয়া হতো এ খাল থেকে। কিন্তু কালের বিবর্তনে অবৈধ দখলদারদের করাল থাবা এবং এ খাল সংস্কারের অভাবে ক্রমেই ভরাট হয়ে মরে যাচ্ছে। বিগত ৫৩ বছরে খালটি খনন না করায় প্রতি বর্ষা মৌসুমে পদ্মা থেকে নেমে আসা পলিতে খালের দুই পাড় ভরাট হয়ে চর পড়ে গেছে। এ সুযোগে দখলবাজরা স্থানীয় প্রশাসনকে হাত করে নানা ছলে গিলে খাচ্ছেন খালের জমি। সরজমিনে দেখা গেছে, শ্রীনগর লঞ্চঘাট থেকে দক্ষিণ পাইকশা পর্যন্ত খালের দুই পাড়ের জায়গা স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে নিয়েছেন। ভূমি অফিসের একশ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজশে এসব খালের পাড় প্রভাবশালীরা দখল করে নিচ্ছেন। একইভাবে দখল করে নিয়েছেন শ্রীনগর বাজারের উত্তর দিকের ধোপাবাড়ী গড়িয়াভাঙ্গা খাল এবং ভূমি অফিসসংলগ্ন পূর্ব দিকের দেউলভোগ হরপাড়া খালটি। এ বিষয়ে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যতন মার্মা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি সদ্য এখানে এসেছেন এবং বিষয়টি তার জানা ছিল না। দু-এক দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।

সর্বশেষ খবর