শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

থাই দূতাবাসে ২০ হাজার পাসপোর্ট আটকা

বিপাকে পর্যটক ও রোগীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

থাই দূতাবাসে ২০ হাজার পাসপোর্ট আটকা

ভিসার জন্য থাই দূতাবাসে পাসপোর্ট জমা দিয়ে বিপাকে পড়েছেন প্রায় ২০ হাজার আবেদনকারী। যাদের মধ্যে রোগী, ব্যবসায়ী, পর্যটক, শিক্ষার্থীও রয়েছেন। গত দুই মাস ধরে থাইল্যান্ড দূতাবাস আবেদনকারীদের কোনো ভিসা দিচ্ছে না। ফলে তারা থাইল্যান্ডে না যেতে পারছেন চিকিৎসা কিংবা ব্যবসার কাজে, না পাচ্ছেন পাসপোর্ট ফেরত। যার ফলে অন্য কোনো দেশেও জরুরি চিকিৎসার জন্য যেতে পারছেন না তারা। কী কারণে ভিসা দেওয়া হচ্ছে না— তারও কোনো ব্যাখ্যা দিচ্ছে না থাই দূতাবাস। পাসপোর্ট আটকে রাখার বিষয়েও কিছু বলছে না। এমনকি থাইল্যান্ডের ভিসা প্রসেসের জন্য নির্দিষ্ট এজেন্ট ভিএফএস গ্লোবালও আবেদনকারীদের পাসপোর্ট ও ভিসা না দেওয়ার বিষয়ে কিছু জানাতে পারছে না।

একাধিক ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ডিসেম্বর থেকে ভিসা নিয়ে জটিলতা করছে থাই দূতাবাস। ডিসেম্বর মাসে থাই দূতাবাসে নতুন একজন ভিসা কর্মকর্তা এসেছেন। তার যোগদানের পর থেকেই এই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। থাইল্যান্ডের ভিসা আবেদনকারীরা আগে সাধারণত চার-পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যেই সব প্রক্রিয়া শেষ করে ভিসা হাতে পেয়ে যেতেন। কিন্তু গত প্রায় দুই মাস ধরে আবেদনকারীরা বলতে গেলে কোনো ভিসা পাচ্ছেন না। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ভিসার জন্য যারা আবেদন করেছেন এবং পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন তার মধ্যে গড়ে ১০ ভাগ আবেদনকারীর পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয়েছে। বাকি ৯০ ভাগ পাসপোর্টই আটকা পড়ে আছে দূতাবাসে। ফলে এসব আবেদনকারীর মধ্যে যারা চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যেতে চেয়েছিলেন তারাই সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। ভিসা না হওয়ায় এবং পাসপোর্ট ফেরত না পাওয়া রোগীরা অন্য কোনো দেশে যাওয়ার জন্য আবেদনও করতে পারছেন না। আর ভিসা নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় নতুন করে কেউ ভিসার আবেদন করতেও ভরসা পাচ্ছেন না। ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, থাইল্যান্ডের ভিসার জন্য প্রতিদিন গড়ে পাঁচ শতাধিক আবেদন জমা পড়ে ভিএফএস গ্লোবাল সেন্টারে। এই হিসাবে গত দুই মাসে ২০ হাজারেরও বেশি পাসপোর্ট জমা পড়ে। কী কারণে পাসপোর্ট আটকা আছে সে বিষয়েও ভিএফএসের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোনো জবাব পাওয়া মিলছে না। তারা কখনো বলছেন প্রসেসিংয়ের কাজ হচ্ছে, কখনো বলছেন তদন্ত চলছে। তবে অনেকেই বলছেন, দূতাবাসে নতুন ভিসা কর্মকর্তা যোগদানের পর এই জটিলতা দেখা দিয়েছে। থাই ভিসা নিয়ে জটিলতার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকে, বিশেষ করে রোগীদের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কারও কারও ভিসা প্রাপ্তি বা পাসপোর্ট ফেরতের জন্য থাই দূতাবাসে সুপারিশ করা হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, থাই ইমিগ্রেশন বিভাগ ভিসা পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে। যে কোনো ভিসার আবেদন ব্যাংকক থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। আবেদনের প্রতিটি কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। কনস্যুলার শাখায় নতুন দুজন কর্মকর্তা ভিসা প্রক্রিয়া সম্পাদনের কাজ করছেন। কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে তারা রীতিমতো হাঁপিয়ে উঠেছেন। তা ছাড়া প্রায় তিন মাস ধরে থাই দূতাবাসে কোনো রাষ্ট্রদূত নেই। আগামী মার্চের আগে ঢাকায় নতুন রাষ্ট্রদূত আসারও সম্ভাবনা নেই। এখন একজন কাউন্সিলর চার্জ দ্য এফেয়ার্সের দায়িত্বে আছেন।

সর্বশেষ খবর