রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
সংসদীয় কমিটি ক্ষুব্ধ

পচা গম আমদানির সঙ্গে জড়িত খাদ্য অধিদফতর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রায় শত কোটি টাকার ক্ষতি করে খাবার অনুপযোগী পচা গম আমদানির সঙ্গে খাদ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সংসদীয় কমিটি দায়ী ব্যক্তিদের কাছ থেকে সরকারের আর্থিক ক্ষতিপূরণের টাকা আদায় ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করেছে।

সংসদ ভবনে গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ। বৈঠকে সংসদীয় উপকমিটি ও জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইর এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হয়। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে গম কিনতে গিয়ে সরকারের প্রায় শত কোটি টাকা ক্ষতির বিষয়টি তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, গুণগতমান যাচাই করার পর টাকা পরিশোধের নিয়ম থাকলেও এ চালানের ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। প্রতিবেদনে এ জন্য দায়ী করা হয়েছে খাদ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক মো. সারোয়ার খান, বর্তমান মহাপরিচালক ফয়েজ আহমেদ, পরিচালক (সংগ্রহ) এলাহী দাদ খানসহ ইমপেক্স গ্রুপের স্বত্বাধিকারী সহিদ জাহাঙ্গীরকে। পরে কমিটি নিম্নমানের গম সরবরাহে সহযোগিতাকারী সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে।

কার্যপত্র থেকে জানা যায়, গত বছর খাদ্য মন্ত্রণালয় ফ্রান্স থেকে জাহাজযোগে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ইমপেক্স কনসালট্যান্ট লিমিটেডের মাধ্যমে ৫২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন গম আমদানি করে। জাহাজটি গত মে মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছার পর ৩১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন গম খালাস করা হয়। বাকি গম খালাস করতে জাহাজটি মংলা বন্দরে যায়। সেখানে গম খালাসে তদারকি কমিটি গমের গুণগতমান পরীক্ষা করে খাবার অনুপযোগী বলে প্রমাণ পায়। ফলে তারা গম খালাস করতে অস্বীকৃতি জানায়। এদিকে খাদ্য অধিদফতর তড়িঘড়ি করে গম কেনার ১০০ কোটি টাকার মধ্যে ৯০ কোটি টাকাই আমদানিকারককে পরিশোধ করে দেয়। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে খাদ্য অধিদফতরের দুর্নীতিসংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেটের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এ সিন্ডিকেট ২০১৪-১৫ অর্থবছরে একই আমদানিকারকের মাধ্যমে চারটি প্যাকেজে গম আমদানি করে। প্রসঙ্গত, ব্রাজিল থেকে আনা চারটি প্যাকেজের ২ লাখ ৫ হাজার ১২৮ মেট্রিক টন গম নিম্নমানের হওয়ায় সারা দেশে আলোড়ন তৈরি হয়; যার ফলে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও সরকার বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়।

সর্বশেষ খবর