বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

ক্রীড়াঙ্গনেও দুর্নীতির ছোঁয়া

টিআইর রিপোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) বলছে, সুশাসন এবং সঠিক জবাবদিহিতার অভাবের কারণেই সব প্রতিষ্ঠানেই কম-বেশি দুর্নীতি বিদ্যমান। এর প্রভাব থেকে মুক্ত নয় বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনও। অন্য দেশের মতো বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনেও দুর্নীতির ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে বলে মনে করে টিআই। গতকাল বিশ্বব্যাপী প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের হয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে টিআইবি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে বলেন, আমাদের দেশে দুর্নীতি বরাবরই একটি আলোচিত বিষয়। এর প্রধানতম কারণ হলো সমাজের প্রায় সর্বস্তরে দুর্নীতির সর্বগ্রাসী রূপ। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। ফলে ক্রীড়াঙ্গনেও দুর্নীতির ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ক্রীড়াঙ্গনে সারা বিশ্বে বছরে ১৪৫ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা হয়। ফলে রাজনৈতিক প্রভাব ও অর্থের পরিমাণ এত বেশি যে, দুর্নীতি এড়ানোটা প্রায় অসম্ভব। বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে কিছু পর্যালোচনা আছে রিপোর্টে, যেখানে মূলত দেখা গেছে, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি চালুর পর বাণিজ্যিকীকরণ হয়েছে এই খেলার। তিনি বলেন, একটা সময় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা হতো। এখন বিভিন্ন ক্লাব এবং ফ্রাঞ্চাইজির সঙ্গে প্রতিযোগিতা হয়। যে কারণে টিভি স্বত্বসহ নানা বিষয় চলে এসেছে, এর সঙ্গে এসেছে অতিরিক্ত বিনিয়োগ এবং অতিরিক্ত মুনাফার প্রশ্ন। ফলে বিশ্বের অন্য যে কোনো দেশের মতো এ খেলাতেও চলে এসেছে বাণিজ্যিকীকরণ, সুশাসনের অভাব এবং দুর্নীতির ছোঁয়া। তবে, বিশ্বের প্রথম জাতীয় ক্রিকেট দল হিসেবে বাংলাদেশ দল দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে প্রশংসা করেছে টিআইবি। সারা বিশ্বের ৬০ জন বিশেষজ্ঞ এবং ১৫০ জন পর্যালোচকের গবেষণার ভিত্তিতে রিপোর্টটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে টিআই। ‘সুশাসনের চ্যালেঞ্জ এবং পাতানো খেলা’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধও প্রকাশ করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। যেখানে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মতো বাংলাদেশের ক্রিকেটেও ম্যাচ গড়াপেটার মতো অনিয়মের প্রভাব পড়ছে। অন্যদিকে ক্রিকেটাঙ্গনে রয়েছে বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা ও সুশাসনের ঘাটতি। বোর্ড ও ক্লাব স্তরে রাজনৈতিক প্রভাবের কথাও এসেছে আলাদা করে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে পাতানো খেলা, স্পট ফিক্সিং এবং অন্যসব প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগের ক্ষেত্রে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে। বিপিএলে পাতানো খেলায় একটি দলের সংশ্লিষ্টতার বিষয়গুলো তুলে এনে বলা হয়েছে, খেলাটির এগিয়ে চলার পথে এসব বড় প্রতিবন্ধকতা সরানো জরুরি। বিসিবির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিট (আকসু) আরও শক্তিশালী করতে দীর্ঘ মেয়াদে দুর্নীতিবিরোধী কৌশল প্রণয়নের কথাও বলা হয়েছে। ক্রিকেটের জন্য একটি বিশেষায়িত স্বাধীন ন্যায়পাল ব্যবস্থা প্রবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।

সর্বশেষ খবর