বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
প্রযুক্তি

দোরগোড়ায় বালাইনাশক তথ্যভাণ্ডার

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

দোরগোড়ায় বালাইনাশক তথ্যভাণ্ডার

ফসলের মাঠে সঠিক বালাইনাশক নির্বাচন করার সহজ উপায় কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বালাইনাশক সংক্রান্ত তথ্যাদি নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ওয়েব ও মোবাইল এপ্লিকেশন। ‘পেস্টিসাইড প্রেসক্রাইবার’ নামক এপ্লিকেশনটি  বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায়ই ব্যবহার করা যাবে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুকল্প দাস এই উদ্ভাবনী কাজটি করছেন। মাঠপর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে সুকল্প দাস লক্ষ্য করেন ফসলের রোগবালাই আক্রমণের ক্ষেত্রে কৃষকরা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মীদের কাছ থেকে তাত্ক্ষণিক সমাধান পান না ; তাদের কাছে সর্বশেষ বালাইনাশক তালিকাও থাকে না। বিশেষ রোগ পোকামাকড়ের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত বালাইনাশক শনাক্ত কৃষককে অনেক ক্ষেত্রে বইপুস্তক  দেখতে হয়। কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। এ উপলব্ধি থেকেই সঠিক বালাইনাশক নির্বাচনের ডিজিটাল প্রযুক্তিভিত্তিক উপায় বের করার স্বপ্ন দেখছিলেন সুকল্প। তার চেষ্টা, মেধা ও শ্রমে এই ওয়েব ও মোবাইল এপ্লিকেশন তৈরিতে সার্বিক সহায়তা করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ টু আই কর্মসূচি। কাজ শেষ হয়ে গেলে এটি দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেবে কৃষি বিভাগ। পেস্টিসাইড প্রেসক্রাইবার ওয়েবপেইজের উদ্ভাবন, পরিকল্পনা ও ডিজাইনার সুকল্প দাস বলেন, এর মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণ সেবাদানকারীসহ সব কৃষক, বিভিন্ন কোম্পানি, গবেষক, কৃষিশিক্ষায় নিয়োজিত ছাত্র-শিক্ষকের পেস্টিসাইডসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য প্রাপ্তি সহজ হয়ে যাবে। ল্যাপটপ, কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে সেবা গ্রহণ করা যাবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং প্রকাশিত বালাইনাশকসংক্রান্ত বইয়ের তথ্যাবলিকে ডিজিটালাইজড করেই এই কাজটি করা হচ্ছে। ওয়েবপেইজ বা মোবাইল অ্যাপসে যে কোনো একটি পোকা বা রোগের নাম লিখে ক্লিক করলেই এর বিপরীতে কার্যকরী সব বালাইনাশক গ্রুপের নাম স্ক্রিনে উঠে আসবে। তখন স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ কর্মী পোকার প্রাদুর্ভাব, স্থানীয় বাজারে সহজলভ্যতা বিবেচনা করে যে কোনো একটি গ্রুপে ক্লিক করলে ওই গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানি কর্তৃক বাজারজাতকৃত সব বাণিজ্যিক নামের বালাইনাশকের নামের তালিকা চলে আসবে। তখন যে কোনো একটি বালাইনাশকে ক্লিক করলে এর প্রয়োগ মাত্রা এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর জানা যাবে। আর রেজিস্ট্রেশন নম্বরটি জানা গেলে ওষুধটি আসল না নকল তাও শনাক্ত করা যাবে। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মীরা মোবাইলে কৃষকের মাঠে দাঁড়িয়েই তাত্ক্ষণিক কৃষককে সঠিক পরামর্শ দিতে পারবেন। সুকল্প দাস বলেন, পেস্টিসাইড ওয়েবপেইজটি নিয়মিত আপডেট করে এর ব্যাপক ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে। পাশাপাশি ওয়েবপেইজে বিভিন্ন বালাইনাশকের বিজ্ঞাপন প্রচার করে আয়ের উৎস তৈরি করা যাবে। ওয়েবপেইজ এবং মোবাইল অ্যাপসের লিংকটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাইটে দেওয়া থাকবে, যেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী সবাই তা ব্যবহার করতে পারবে। কৃষি উত্পাদন বৃদ্ধি, নিরাপদ পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে পেস্টিসাইড সম্পর্কিত তথ্যাদির ডিজিটালাইজেশনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

সর্বশেষ খবর