শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

সাজা শেষেও দেশে ফিরতে পারছেন না বাংলাদেশিরা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

সাজার মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হওয়ার পরও মুক্ত হয়ে দেশে ফিরতে পারছেন না ভারতের কোচবিহার জেলে আটক লালমনিরহাটের ৪৭ বাংলাদেশি। এর মধ্যে ৩৭ জন পুরুষ ও ১০ জন মহিলা। সূত্রমতে, এসব বাংলাদেশি লালমনিরহাটের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দা। বিজিবি সূত্র জানায়, এসব বাংলাদেশি সীমান্তবর্তী গ্রামের অধিবাসী, তারা তাদের নিজস্ব জমিতে ও ভারতসংলগ্ন নদীতে মাছ ধরার সময় কিংবা ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে বা গরু আনার সময় বিএসএফ তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়। কিন্তু লালমনিরহাটের সীমান্তের বিভিন্ন গ্রামের অধিবাসীদের কারাভোগের মেয়াদ শেষ হলেও নানা আইনি জটিলতার কারণে দেশে ফিরতে পারছেন না। লালমনিরহাট ১৫ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল বজলুর রহমান হায়াতি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘যাদের সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে দেশে আনার চেষ্টা চলছে।’ এদিকে বিজিবির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, লালমনিরহাট জেলার দীর্ঘ সীমান্ত এলাকার শুধু ৪৭ জন নন, আরও অনেক অধিবাসী ভারতের কারাগারে আটক রয়েছেন। তাদের সাজার মেয়াদ শেষ হলেও দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সালেকুজ্জামান সালেক জানান, তার ইউনিয়নের অন্তত ১৩ জন ভারতের কারাগারে আটক রয়েছেন। তাদের অনেকের সাজার মেয়াদও শেষ হয়েছে। হাতীবান্ধার আমঝোল গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন জানান, ১৫ বছর আগে তার বড় ভাই আবদুর রহমানকে সীমান্তসংলগ্ন জমিতে কাজ করার সময় বিএসএফ ধরে নিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানা গেছে তিনি কোচবিহার কারাগারে আটক রয়েছেন। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে ফেরত আসতে পারছেন না। একই কথা জানালেন জাওরানী সীমান্তের নুরু মাস্টার। তিনি বলেন, তার গ্রাম থেকে ১২ বছর আগে আবদুল হককে বিএসএফ ধরে নিয়ে যায়, কিন্তু তার সন্ধান আজও পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, কোচবিহার জেলে মোট ২২৭ জন বাংলাদেশি আটক রয়েছেন। এর মধ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও বিভিন্ন অভিযোগে ১১৩ জন সাজা খাটছেন। ৬৭ জনের মামলা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে এবং ৪৭ জনের সাজার মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। এ ছাড়াও ৬২ বাংলাদেশি শিশু কোচবিহার জেলে আটক রয়েছে। অচিরেই তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হোক— এ দাবিতে তারা অনশনসহ নানা কর্মসূচিও শুরু করেছে। এ ব্যাপারে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করব।’

সর্বশেষ খবর