বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালন করতে পারছে না : সুজন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ কমিশন দায়িত্ব পালন করতে পারছে না বলে মনে করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করার বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার এ মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার বিশ্বাস। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান। বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। এ জন্য তারা শঙ্কিত। নির্বাচনে দলীয়ভাবে প্রার্থী দেওয়ার কারণে প্রার্থীর সংখ্যা কমে গেছে। আর যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চান, তারাও প্রার্থী হতে পারছেন না রাজনৈতিক দলের লোকজনের চাপে। তিনি বলেন, জনগণ ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারছেন না। এ কারণে নির্বাচনের প্রতি তাদের কোনো আস্থা নেই। যেহেতু দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা হচ্ছে, তাই সাধারণ প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। তিনি বলেন, অনেক জায়গায় মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়ায় একক প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছে। এটি নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা। এখন লেভেল প্লেয়িং ঠিক নেই। এ নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়, অযোগ্য। কারণ বারবার দায়িত্ব পালনে তারা ব্যর্থ হচ্ছে। বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন যদি বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ হয় এর পরিণতি মঙ্গলজনক হবে না। প্রশ্নবিদ্ধ হলে সব নির্বাচন প্রক্রিয়া ভেঙে পড়বে, যা কারও জন্য কল্যাণকর হতে পারে না। নির্বাচন কমিশনারকে নিরপেক্ষ ও সাহসী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের সঙ্গে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান জড়িত থাকলেও পরিচালনার মূল দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নির্বাচন কমিশন যদি যথাযথ পূর্বপ্রস্তুতি ও পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তবে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঠেকানো সম্ভব। দিলীপ কুমার বিশ্বাস বলেন, যথাযথ প্রস্তুতির আগেই হঠাৎ করে দলভিত্তিক নির্বাচনের কারণে সবাইকে বিভিন্নমুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সুস্পষ্ট বা সুনির্দিষ্ট কোনো পদ্ধতি নির্ধারণ করে ধীরে ধীরে দলভিত্তিক নির্বাচনে গেলে অনেক সমস্যা এড়ানো যেত। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, দলাদলি, প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, মারামারি যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্টের একটি বড় কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে।

 নিজ দলের মধ্যে দলাদলির কারণে ক্ষমতাসীনরাই অধিক ঝুঁকিতে রয়েছে বলেও ধারণা করছেন তিনি। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো গঠনমূলক ভূমিকা পালন, আচরণবিধিসহ নির্বাচনী আইনকানুন যথাযথভাবে মেনে চলা ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়ার জন্য সংগঠনটির পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়। এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, ২০১৩ সালের পর এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। সরকার থেকে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করা হচ্ছে না। মানসম্মত নির্বাচন না হওয়ায় প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা নেই। তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তাই সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করার সুযোগ দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা সুজনের পক্ষ থেকে বলেছি, দলভিত্তিক স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ফলাফল শুভ হয় না। আমরা বিগত পৌর নির্বাচনে সেটিই লক্ষ্য করেছি।

সর্বশেষ খবর