শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

কুমির চাষে নতুন দিগন্ত

বান্দরবান প্রতিনিধি

কুমির চাষে নতুন দিগন্ত

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে বালুখালী টেলিভিশন উপ-কেন্দ্রের ঠিক কাছাকাছি নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম। এখানেই ২৫ একর জায়গার ওপর বেসরকারিভাবে গড়ে উঠেছে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম কুমির চাষ প্রকল্প। এ প্রকল্প দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত মানুষ। মিঠা পানির এই কুমির চাষ প্রকল্পটি ২০০৯-২০১০ সালে শুরু করে আকিজ ওয়াল লাইফ লিমিটেড। প্রথমে পরিক্ষামূলকভাবে ৫০টি কুমির ছাড়া হয়। যদিও পরিচর্চার অভাবে ৩টি কুমির মারা যায়, বাকি ৪৭টি বড় কুমির রয়ে গেছে। এর মধ্যে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে ৩১টি মাদি কুমিরের ডিম থেকে সাড়ে ৬০০ বাচ্চা হয়েছে। এগুলো এখন বড় হচ্ছে। প্রকল্পের ম্যানেজার জসিম উদ্দিন জানান, কুুমির চাষ ব্যয়বহুল। প্রতি মাসে খাবার বাবদ ব্যয় হয় দেড় লাখ টাকা। প্রতি সপ্তাহে খাবার হিসেবে ২০০ কেজি মাছ-মাংস দিতে হয়। বাচ্চা কুমিরের জন্য মাংস কেটে কেটে কিমা বানিয়ে দিতে হয়। গত ২ বছরে ৩১টি মাদি কুমিরের ডিম থেকে ৬৫০টি বাচ্চা হয়েছে। তার মধ্যে বিভিন্ন কারণে ১১টি বাচ্চা মারা গেলেও বাকিগুলো সুস্থ আছে। আগামী বছর থেকে বিভিন্ন দেশে কুমির রপ্তানি শুরু হবে। তখন হাজার কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ খাত থেকে যেমন প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় হতে পারে, তেমন সরকারও পেতে পারে বিপুল রাজস্ব। কুমিরগুলো প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়ে ওঠায় প্রকল্পের আর্থিক ক্ষতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। জসিম উদ্দিন আরও জানান, ময়মনসিংহের ভালুকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন এবং সুন্দরবনে সরকারি অর্থায়নে একটি করে কুমির চাষ প্রকল্প থাকলেও ঘুমধুমেরটি দেশের সর্ববৃহৎ ও এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম কুমির চাষ প্রকল্প। প্রকল্পের পরিচর্যাকারী মো. আজিজ জানান, মাদি কুমিরগুলো গড়ে ৫০-৫৫টি ডিম ছাড়ে। এসব ডিম সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সব সময় নজর রাখা হয়। পরিচর্চা করলে প্রতিটি ডিম থেকেই বাচ্চা পাওয়া সম্ভব। এখানে একটি পর্যটন স্পট গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এ স্পট হলে ঘুমধুম একটি বাণিজ্যিক নগরীতে পরিণত হবে। স্থানীয় মো. আলী জানান, প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী কুমির দেখতে ভিড় করছেন। তবে এখানে যাতায়াত ও খাবারের ব্যবস্থা না থাকায় দর্শনার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ওয়াকিবহাল সূত্র মতে, কুমির চাষের পাশাপাশি এ এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ প্রকল্প, বার্ড পার্ক ও মিউজিয়াম গড়ে তুললে পর্যটন স্পট হিসেবে এটি হতে পারে সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর