বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

পোশাকে লোকজ নকশা

জিন্নাতুন নূর

পোশাকে লোকজ নকশা

বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ। এ দিন ঘিরে মানুষের আনন্দ-উৎসাহ-উদ্দীপনার শেষ নেই। ধনী-গরিব সবাই সামর্থ্য অনুযায়ী নিজেকে বর্ণিল সাজে সাজিয়ে তোলেন। ঈদ-পূজার মতো     বড় ধর্মীয় উৎসবের বাইরে বিগত বছরগুলোয় নববর্ষকে ঘিরেও দেশের ফ্যাশনপাড়ার ব্যস্ততা লক্ষণীয়। নগরীর বুটিক হাউসগুলো ঘুরে দেখা যায়, নতুন বছর উপলক্ষে এবার রঙিন পোশাকে লোকজ নকশার প্রাধান্য বেশি। আর এর বাইরে চিরাচরিত সাদা-লালে তৈরি পোশাক তো আছেই। ফ্যাশন হাউস ‘কে ক্র্যাফট’ বরাবরের মতো এবারও বাঙালির প্রাণের উৎসবের জন্য তৈরি করা পোশাকগুলোয় রং ও নকশায় বৈচিত্র্য এনেছে। লাল-সাদা এ রং দুটির পাশাপাশি পোশাকে অন্য রঙিন রং যেমন হলুদ, গোলাপি, নীল, বেগুনি, সবুজ ইত্যাদির ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এবার বৈশাখে সুতি ও সিল্ক কাপড়ে ছেলেদের এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবি এনেছে। এ ছাড়াও আছে সুতির স্লিম ফিট পাঞ্জাবি, দাম ১২৫০ টাকা। আছে মেশিন অ্যামব্রয়ডারি ও স্ক্রিন প্রিন্ট করা সুতি পাঞ্জাবি। এর দাম ১২৫০ টাকা। সুতির লম্বা পাঞ্জাবি ১৫০০ টাকা। লিলেন ও সুতি কাপড়ের তৈরি মেয়েদের টপসে থাকছে মেশিন অ্যামব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট ও টাসেল। এর দাম ১৪০০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০০ টাকা। মেয়েদের সুতির সালোয়ার-কামিজে থাকছে অ্যামব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট ও টাই ডাই। এর সঙ্গে থাকছে টাসেল। দাম ৩০০০ থেকে সর্বোচ্চ ৬৫০০ টাকা। সুতি ও সিল্ক উভয় কাপড়ে এগুলো তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া মেয়েদের বৈশাখী শাড়িতে এবার বৈচিত্র্যময় নকশা দৃষ্টি কাড়ছে। বিশেষ করে আঁচলে ঝুল ও দৃষ্টিনন্দন পাড়ে সুতি, মসলিন, সিল্ক ও হাফ সিল্কের শাড়িগুলো বেশ আকর্ষণীয়। এতে স্ক্রিন প্রিন্ট, অ্যামব্রয়ডারি ও টাসেলের ব্যবহার লক্ষণীয়। দাম ২৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১১,০০০ টাকা। রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের ‘দেশী দশ’-এর বুটিকগুলোয় এরই মধ্যে বৈশাখের বেচাকেনা জমে উঠতে শুরু করেছে। এসব বুটিকে ক্রেতারা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে গহনা, জুতা, ব্যাগ ইত্যাদি কিনছেন। দেশী দশ-এর দোকানগুলোয় একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি বিখ্যাত ফ্যাশন হাউস থাকায় ভালো ক্রেতাসমাগম দেখা যায়। ব্র্যাকের ফ্যাশন হাউস ‘আড়ং’-এর বৈশাখী সংগ্রহও দেখার মতো। বাঙালি লোকসংস্কৃতির বিভিন্ন মোটিফের মননশীল ব্যবহারের ফলে আড়ংয়ের পোশাকগুলো এবারও ক্রেতাদের মনোযোগ কেড়েছে। ছেলেদের বিভিন্ন রঙের সুতি পাঞ্জাবিতে ফোক আর্ট, রিকশা আর্ট, হ্যান্ড অ্যাপলিক ও কাঁথা অ্যামব্রয়ডারি ব্যবহার করা হয়েছে। দাম ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা। এ ছাড়া মেয়েদের পিওর সিল্কের শাড়ির আঁচলে মিরর অ্যামব্রয়ডারি ও ফোক মোটিফের ব্যবহার রয়েছে। এক্সক্লুসিভ জামদানি শাড়িতে হ্যান্ড অ্যাপলিক কাজ করা হয়েছে। আড়ংয়ের সুতি শাড়িতে মাল্টি কালার প্রিন্টেড কাঁথা আর্ট ব্যবহার করা হয়েছে। আর তরুণীদের জন্য তৈরি বিশেষ সালোয়ার-কামিজে লম্বা ছাঁট ব্যবহার করা হয়েছে। এর সঙ্গে থাকছে রঙিন দোপাট্টা আর লাল, সাদা, হলুদ কামিজের ওপর থাকছে রিকশা আর্ট ও স্ক্রিন প্রিন্টের কাজ। ২৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা। ছেলেশিশুদের সুতির পাঞ্জাবিতে স্ক্রিন প্রিন্টের বিভিন্ন পশু-পাখির মুখের ব্যবহার করা হয়েছে। দাম ৪৫০ টাকা। এ ছাড়া মেয়েশিশুদের কয়েক রঙা শাড়িতে স্ক্রিন প্রিন্ট ও লোকজ মোটিফ ব্যবহূত হয়েছে।

দাম ১৫০০ টাকা। মিরপুর ২ নম্বর আড়ংয়ে আসা ক্রেতা নিশা আক্তার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘এবার বৈশাখে আসা পোশাকগুলো গরমের জন্য উপযোগী এবং নকশাও বেশ বৈচিত্র্যময়।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর