শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

আম নিয়ে কাড়াকাড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আম নিয়ে কাড়াকাড়ি

 ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির দুই পক্ষের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ‘আম’ প্রতীকের দাবি নিষ্পত্তিতে শুনানি করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সংসদ নির্বাচনে আম প্রতীক নিয়ে এনপিপির প্রার্থীরা অংশ নিলেও পরবর্তীতে উপ-নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ চরম রূপ  নেয়।  শেখ শওকত  হোসেন নিলু ও ফরিদুজ্জামান ফরহাদের পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার ও নতুন কমিটি ঘোষণার  প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশনের কাছে ‘আম’ প্রতীকের দাবি নিয়ে চিঠি দেয় দুই পক্ষ।

 ইসি কর্মকর্তারা জানান, নাম ও প্রতীক নিয়ে বিভক্তি দেখা দিলে কিংবা একাধিক দাবিদার থাকলে সে বিষয়ে শুনানির পর ইসি সিদ্ধান্ত দেবে- কোনটি মূল দল। নিবন্ধিত দলের মধ্যে দুই পক্ষের ঝামেলা হলে এক পক্ষ মূল দল থাকবে; অন্য পক্ষকে নতুন করে নিবন্ধনের জন্য শর্ত পূরণ করে আবেদন করতে হবে। তদন্ত ও শুনানি কিংবা আদালতের নির্দেশনার মাধ্যমে এ জটিলতার নিষ্পত্তি হবে। এর আগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির নিবন্ধন ও কাঁঠাল প্রতীক নিয়ে দুই পক্ষের দাবির মুখে তদন্ত করে দুই কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করে ইসি। পরে দুই পক্ষ একীভূত হয়ে নতুন কমিটি করতে বাধ্য হয়। জাসদের মশাল প্রতীক নিয়েও চলছে জটিলতা। কমিশন ইতিমধ্যে দুই পক্ষের শুনানি করেছে। জাসদের প্রসঙ্গ টেনে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, জাসদের দুই পক্ষের শুনানি হয়েছে। তেমনি এনপিপির দুই পক্ষের শুনানি করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

দুই পক্ষই আম চায় : প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিবকে বহিষ্কারের জের ধরে বিভক্তি দেখা দেয় এনপিপিতে, যে দলের জন্ম হয়েছিল ফখরুদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে। প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব পরে চেয়ারম্যানকেই বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। দাবি ও আপত্তি নিয়ে দুই পক্ষই ইসির কাছে আসায়, এ বিষয়ে শুনানির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান কমিশনের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বছরখানেক ধরে এনপিপির কমিটি নিয়ে বিরোধ চলছে। তাদের চিঠিপত্রগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কমিশন দুই কমিটির বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত দেবে। দুই পক্ষকে শিগগিরই ডাকা হবে। ২০০৮ সালের ১৩ নভেম্বর ‘আম’ প্রতীকে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয় ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি। সে সময় নথিতে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে শেখ শওকত হোসেন নিলু ও মহাসচিব হিসেবে অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নাম দেওয়া হয়। ২০১৪ সালের ১৬ আগস্ট চেয়ারম্যান নিলু বহিষ্কার করেন মহাসচিব ফরহাদকে; ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব দেন আবদুল হাই মণ্ডলকে। পরে ১৮ জুলাই চেয়ারম্যান নিলুর সভাপতিত্বে এনপিপি  প্রেসিডিয়াম সভা করে। ওই বছর ২২ অক্টোবর জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে নিলু-হাই কমিটি অনুমোদন পায়। পরে সেই কমিটির তালিকা ইসিতে পাঠানো হয়। প্রথম মহাসচিব ফরহাদ গত বছর ১৪ অক্টোবর নিজেকে চেয়ারম্যান ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফাকে মহাসচিব করে নতুন কমিটির ঘোষণা দেন। শওকত হোসেন নিলুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে এই অংশের পক্ষ থেকে ইসিকে জানানো হয়। নিলুর এনপিপি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট থেকে  বেরিয়ে আলদা মোর্চা করলেও ফরহাদের এনপিপি এখনো খালেদা জিয়ার সঙ্গেই রয়েছে। ২০১৪ সালের ১৯ জুলাই এনপিপির এ অংশের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কার্যকরী কমিটির সভার কার্যবিবরণী যুক্ত করে ইসির কাছে দলীয় প্রতীক ‘আম’ দাবি করেন ফরহাদ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর