শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঢাকায় আত্মগোপনে এমপি রানা

সহযোগীরাও পালিয়েছে টাঙ্গাইল থেকে

শেখ সফিউদ্দিন জিন্নাহ্

ঢাকায় আত্মগোপনে এমপি রানা

টাঙ্গাইলের একসময়ের প্রভাবশালী এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিন ভাই গ্রেফতারের ভয়ে এখন ফেরারি। শুধু এমপি রানা ও তার ভাইয়েরাই নন, একসময়ের তাদের সহযোগীরাও এখন আর টাঙ্গাইলে নেই। কেউ কেউ টাঙ্গাইল ছেড়ে পালিয়েছেন। আর যারা টাঙ্গাইলে আছেন তারা খোলস পাল্টে রানাবিরোধী দলে ভিড়েছেন। টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় এমপি রানাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও রহস্যজনকভাবে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখে ধুলা দিয়ে রাজধানী ঢাকাতেই পালিয়ে আছেন বলে একাধিক সূত্র জানায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ফারুক আহমদের হত্যায় জড়িত এমপি রানা ও তার তিন ভাই— এমন খবর জানার পরই টাঙ্গাইল ছেড়ে পালিয়েছেন রানা ও তার ভাইয়েরা। তিনি বলেন, এমপি রানা ও তার ভাই সাবেক মেয়র মুক্তি দুজনই রাজধানী ঢাকায় আত্মগোপনে আছেন। অন্য দুই ভাই কাঁকন ও বাপ্পা দেশের বাইরে পাড়ি জমিয়েছেন।

একটি সূত্র জানায়, এমপি আমানুর রহমান খান রানা ঢাকার উত্তরায় ও ছোট ভাই সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি বাড্ডায় আত্মগোপনে রয়েছেন। আরেক ছোট ভাই জাহিদুর রহমান খান কাঁকন প্রথমে থাইল্যান্ড এবং পরে সুইজারল্যান্ডে পাড়ি জমান। তার স্ত্রী আগে থেকেই সেখানে বসবাস করছেন বলে জানা গেছে। আরেক ছোট ভাই সানিয়াত খান বাপ্পা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড— এ তিন দেশে আসা-যাওয়া করেন। এদিকে ৩ নম্বর জামুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা সহিদুল ইসলাম খান হেস্টিংস বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঘাটাইলের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নিয়ে এমপি রানা উত্তরার একটি বাসায় মিটিং করেন। ওই মিটিংয়ে কাকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হবে তা নির্ধারণ করা হয়। অন্যদিকে ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সহিদুল ইসলাম লেবু বলেন, অপরাধী যেই হোক তার বিচার হওয়া উচিত। তিনি বলেন, এমপি রানা বর্তমানে মিরপুর ২ নম্বর সেকশনের সেন্টু মিয়ার বাড়িতে আছেন। রানা সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে কথা বলবেন এমন কাউকে টাঙ্গাইলে কখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। কারণ, মুখ খুললেই ওই ব্যক্তির ওপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়্গ। আর আজ সেসব নির্যাতন বা সাম্রাজ্য নেই বললেই চলে। এদিকে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি এমপি রানাসহ পলাতক ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ৬ এপ্রিল টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক আমিনুল ইসলাম এ আদেশ দেন। এদের মধ্যে এমপি রানা এবং তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহিদুর রহমান খান মুক্তি, জেলার সাবেক ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাঁকন ও ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা এবং কবির হোসেন, সাবেক কমিশনার মাসুদ মিয়া, চানে, নুরু, সানোয়ার হোসেন ও দাঁতভাঙা বাবু পলাতক রয়েছেন। এ ছাড়া আসামি আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী, ফরিদ মিয়া ও সমীর টাঙ্গাইল জেলহাজতে রয়েছেন। ৩ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর