বুধবার, ৪ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা
পজেটিভ বাংলাদেশ

গাজীপুরের মাটির ব্যাংক বিশ্ববাজারে

শেখ সফিউদ্দিন জিন্নাহ্

গাজীপুরের মাটির ব্যাংক বিশ্ববাজারে

গাজীপুরের মাটির ব্যাংক দেশের বিভিন্ন এলাকা ছাড়িয়ে বিদেশ পর্যন্ত স্থান করে নিয়েছে। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন অভিজাত শপিংমল ও ফুটপাতের দোকানে সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এ ব্যাংকগুলো সাজিয়ে রাখা হচ্ছে। এ ব্যাংক সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সৌদিআরব, দুবাইয়ের নামি-দামি শপিংমলেও শোভা পাচ্ছে। কালিয়াকৈর উপজেলার ঢালজোড়া ইউনিয়নের উল্টাপাড়া গ্রামে তৈরি হচ্ছে এই মাটির ব্যাংক। গ্রামের সাধারণ মানুষ আগের দিনে ব্যাংকে গিয়ে টাকা না রাখতে পারলেও মাটির তৈরি ব্যাংক কিনে ঘরের এক কোণে অথবা খাটের নিচে রেখে তার মধ্যে টাকা পয়সা জমিয়ে রাখতেন। ব্যাংকটি ভরে গেলে তা ভেঙে কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতেন। এটাই ছিল আগেকার মানুষের জীবন-সংসারে সঞ্চয়ের ব্যবস্থা। সেই মাটির ব্যাংকের প্রচলন এখনো রয়েছে। কেউ শখের বসে, কেউবা ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য, কিংবা কেউ টাকা পয়সা জমানোর জন্য এখনো মাটির তৈরি ব্যাংক কেনেন। এখনো মাটির ব্যাংকের প্রচলন আছে বলেই উল্টাপাড়া গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবার এই মাটির তৈরি ব্যাংক বিক্রি করে পরিবারে স্বচ্ছলতা এনেছেন। খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ প্রায় দুই যুগের বেশি সময় ধরে এ গ্রামের মানুষ মাটির ব্যাংক তৈরির কাজ করছেন। এ কাজ করেই সংসার চালান এখানকার মানুষ। জীবনের তাগিদে তারা এ শিল্পকেই একমাত্র পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। নারীরাও পিছিয়ে নেই এ কাজে, পুরুষদের পাশাপাশি তারাও তৈরি করছেন মাটির ব্যাংক। জানা গেছে, ২৫ বছর আগে গ্রামের রায়মোহনের ছেলে দিনুবন্ধু পাল সাভারের একটি বিদেশি মৃিশল্প প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। ওই প্রতিষ্ঠানে মাটি দিয়ে ব্যাংক, ফুলদানি, ফুলের টপ, ঝাড়, বসার মোড়াসহ ঘরে সাজিয়ে রাখার মতো অনেক রকমের খেলনা তৈরি হতো। সেখানে তিনি অনেকদিন কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এরপর তিনি গ্রামের বেকার কয়েকজনকে নিয়ে ৮ হাজার টাকা ধারদেনা করে একটি হুইল মেশিন (ব্যাংক তৈরির জন্য মাটি উপযোগী করার যন্ত্র) কেনের এবং সেটি দিনুবন্ধু পালের বাড়ির উঠানে বসান। সেদিন থেকে শুরু হয় পাঁচ-ছয় যুবককে সঙ্গে নিয়ে দিনুবন্ধু পালের ব্যাংক তৈরির কাজ। এ ব্যাংক তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন দেখে গ্রামের অনেকেই পরে দারুণভাবে উৎসাহিত হন।

সর্বশেষ খবর