শুক্রবার, ৬ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

বদলে যাচ্ছে চিড়িয়াখানা

মোস্তফা কাজল

বদলে যাচ্ছে চিড়িয়াখানা

বদলে যাচ্ছে রাজধানীর জাতীয় চিড়িয়াখানা। এ বিষয়ে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী নতুন করে কেনা হচ্ছে তিন শতাধিক বিদেশি প্রাণী। যোগ করা হচ্ছে নানান সুযোগ-সুবিধা। কয়েক দিন আগেই চিড়িয়াখানাকে ঢেলে সাজানোর এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, চিড়িয়াখানায় দর্শকের জন্য থাকবে ভাসমান হোটেলে বসে বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ। আরও থাকবে নাইট সাফারি। বর্তমানে জাতীয় চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন ধরনের দুই হাজারের বেশি প্রাণী ও পাখি রয়েছে। সূত্র জানায়, ২০ এপ্রিল চিড়িয়াখানায় কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হয়। তাতে নতুন করে তিন শতাধিক প্রাণী ও পাখি সংগ্রহে একটি কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন পেয়েছে। বৈঠকের পর মহাপরিকল্পনার একটি খসড়া অনুমোদনের জন্য মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওই প্রস্তাব অনুমোদন পেলেই প্রাণীগুলো সরবরাহে দরপত্র আহ্বান করা হবে। চিড়িয়াখানার কিউরেটর এস এম নজরুল ইসলাম জানান, চিড়িয়াখানায় আরও থাকবে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের দুটি ফুড সেন্টার। দর্শক বিনোদনের জন্য নির্মাণ করা হবে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। পাশাপাশি প্রবেশ ফি ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হচ্ছে। প্রাণী ও পাখি কেনার অংশ হিসেবে ৯ কোটি ৯৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে বিদেশি প্রাণী ও পাখি সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মহাপরিকল্পনা অনুমোদন পেলে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজার থেকে ৩১৪ প্রাণী ও পাখি সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ২৬ প্রজাতির ১১৪টি দুষ্প্রাপ্য প্রাণী ও পাখি সংগ্রহ করা হবে। এজন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ কোটি ৮১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে লাল বানর, গণ্ডার, উটপাখি, আফ্রিকান সিংহ, সাদা সিংহ, চিত্রা হায়েনা, সাদা পেলিকান পাখি, ধূসর পেলিকান পাখি, সারস, কেশোয়ারী পাখি কেনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। কোন কোন দেশ থেকে এসব প্রাণী ও পাখি আসবে তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঠিক করবে। আর অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকায় ১৩ প্রজাতির ২০০টি প্রাণী ও পাখি সংগ্রহ করা হবে। ভোঁদড়, গোখরা সাপ, লাউডগা লাপ, দাঁড়াশ সাপ, সোনালি সাপ, লালমুনিয়া পাখি, হোয়াইট পিংক কবুতর, আঁচিল মুরগি, ময়না, হলুদ টিয়া, তিতির কেনা হবে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে। সূত্রমতে, দীর্ঘদিন ধরে প্রাণী সংগ্রহ না করা এবং বয়স্ক প্রাণীগুলো মারা যাওয়ায় চিড়িয়াখানার বিভিন্ন খাঁচা খালি হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে প্রাণী পুষ্টি কর্মকর্তা আবু সাঈদ কামাল বাচ্চু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কিছু প্রাণীর সঙ্গী মারা যাওয়ায় এগুলো একা হয়ে গেছে। নতুন প্রাণী আসার পর সেগুলো জুটি খুঁজে পাবে। এর আগে ২০১২ সালে ১০ কোটি টাকায় প্রাণী কেনার উদ্যোগ নেওয়া হলেও বরাদ্দ মিলেছিল সাড়ে ৭ কোটি টাকা। ওই টাকা দিয়ে ২৭০টি প্রাণী সংগ্রহের কথা থাকলেও সাড়ে ৫ কোটি টাকায় ৩০ প্রজাতির ২৩০টি প্রাণী সংগ্রহ করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিড়িয়াখানায় বর্তমানে রয়েছে ১০ প্রজাতির ৪০টি মাংসাশী প্রাণী। তৃণভোজী প্রাণী আছে ২৩ প্রজাতির ২২১টি। ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী ও সরীসৃপ আছে ২৫ প্রজাতির ২৪৭টি। পাখি আছে ৫৬ প্রজাতির ১০৬টি। ফিশ অ্যাকোরিয়ামে আছে ২৩ প্রজাতির ৮০১টি দেশি-বিদেশি মাছ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর