বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ চায় জলবিদ্যুৎ নেপাল ট্রানজিট

শেষ হলো সচিব বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে নেপালের জলবিদ্যুৎ খাতে যৌথ বিনিয়োগ এবং তা থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রানজিট সুবিধার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে নেপাল। ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বিদ্যমান কারিগরি বাধা দূর করতে দুই দেশ একটি সমঝোতা চুক্তিতে (এমওইউ) সই করেছে। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের উপস্থিতিতে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) এবং নেপাল ব্যুরো অব স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড মেট্রোলজের মধ্যে এ চুক্তি হয়। এ চুক্তির মধ্য দিয়ে এখন থেকে বাংলাদেশের বিএসটিআই অনুমোদিত পণ্য পরীক্ষা ছাড়াই গ্রহণ করবে নেপাল। একই সুবিধা পাবে নেপালের স্ট্যান্ডার্ড ব্যুরোও।

চুক্তি সইয়ের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এক দেশের পণ্য অন্য দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে ওই দেশের মানদণ্ড বিবেচনা করতে হয়। এ চুক্তি না থাকার ফলে এ ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল। এখন সেই বাধা দূর হবে। বাংলাদেশ নেপালকে ১০০টির মতো পণ্যে এবং নেপাল বাংলাদেশকে ৫০টি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বলেও বৈঠকে মতৈক্য হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যে ট্রানজিট কার্গো পরিবহনের পদ্ধতি নির্ধারণ, উভয় দেশের পণ্য আমদানিতে পারস্পরিক শুল্কসুবিধা সম্প্রসারণ, ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ, কাঁকরভিটা-পানিট্যাংকি-ফুলবাড়ী বাণিজ্যপথ পুরোপুরি চালু, রোহনপুর ও সিনবাদ রেলপথ ব্যবহার করে ট্রানজিটে পণ্য পরিবহন সুবিধা, পরস্পরের বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণ, দুই দেশের মধ্যে সমন্বিত পর্যটনশিল্পের প্রসার, ওষুধপণ্যের নিবন্ধন পদ্ধতি সহজীকরণ, সরকারি পর্যায়ে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরাসরি ক্রয়-বিক্রয় সম্পর্কিত সমঝোতা স্মারক প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা হয়। স্যানিটারি ও ফাইটো স্যানিটারি বিষয়ে পৃথক একটি এমওইউ সইয়ের ব্যাপারেও উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে। সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, স্থলবেষ্টিত নেপালের বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে সড়ক ও রেল ট্রানজিটের মাধ্যমে পণ্য আমদানিতে উৎসাহ রয়েছে। শুল্কমুক্ত সুবিধার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। আরও আলাপ-আলোচনার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে নেপালে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ বাংলাদেশে আমদানির সম্ভাবনার কথাও বলেন তিনি। নেপালের বাণিজ্য সচিব নায়ন্দ্রপ্রসাদ উপাধ্যায় বলেন, ‘বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উঠেছে। এটা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গতিশীল করবে।’ নেপালে ভূমিকম্পের পর ‘অর্থবহ’ সহায়তা দেওয়ার জন্য তিনি বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সর্বশেষ খবর