বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

পরীক্ষায় ফেল করার মানেই হয় না : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, বর্তমান সরকার শিক্ষার পরিবেশ সুনিশ্চিত করেছে বলেই পাসের হার বাড়ছে। আর শিক্ষাজীবন শেষে যাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং বেকার না থাকে সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা যেখানে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছি সেখানে একটু মনোযোগ দিয়ে পড়লেই পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব। ফেল করার মানেই হয় না। গতকাল সকালে গণভবনে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল গ্রহণকালে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর হাতে পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রধানমন্ত্রী এ সময় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঝালকাঠি এবং পঞ্চগড় জেলা পরিষদ কার্যালয়ে উপস্থিত শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান বিশ্বে চাহিদার কথা বিবেচনা করেই সরকার কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার ওপর অধিক গুরুত্বারোপ করেছে। যাতে করে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বর্তমান প্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে পারে। এ কারণে সরকার শিক্ষকদের জন্যও আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছে। তিনি বলেন, সরকার স্কুল পর্যায়ে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছে। যাতে করে শিক্ষার্থীদের মাঝে ধর্মীয় মূল্যবোধ গড়ে উঠতে পারে। কারণ ভবিষ্যৎ নাগরিকদের আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, প্রতি বছর মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ এবং বৃত্তি চালুর সরকারি উদ্যোগের ফলে অভিভাবকদের ওপর অর্থনৈতিক চাপ অনেকাংশেই কমে এসেছে। সরকারিভাবে দেশে বিশাল পরিমাণে মেধাবৃত্তি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত মেধাবৃত্তি অন্য কোনো দেশ দেয় কিনা আমি জানি না। শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার গৃহীত বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তুলবে এবং ভবিষ্যতে আর কোনো শিক্ষার্থীই পরীক্ষায় ফেল করবে না বলে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা মেধাবী। তাই আর যাই হোক তারা পরীক্ষায় ফেল করতে পারে না। পরীক্ষায় ভালো ফলাফলকারীদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরীক্ষায় পাসের হার বেড়েছে, যদিও কেউ কেউ কৃতকার্য হতে পারেনি। তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে গড়ে উঠবে। যাতে করে তারা অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে পারে। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আগামী প্রজন্ম নতুন নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আর কারও কাছে হাত পাতবে না। বাংলাদেশ তার জনশক্তি এবং নিজস্ব সম্পদকে কাজে লাগিয়ে নিজের পায়ে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার তার সরকারের লক্ষ্যের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যান্যের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সোহরাব হোসাইনসহ সব শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফিলিস্তিনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সৌজন্য সাক্ষাৎ : ফিলিস্তিনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ইউসেফ এস ওয়াই রমাদান গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার গণভবনের বাসভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, বৈঠকে তারা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে আলাপকালে রমাদান বাংলাদেশে ফিলিস্তিনের পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানান। প্রেস সচিব বলেন, তারা মধ্যপ্রাচ্যে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনীর’ আরবি সংস্করণ প্রকাশের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

সর্বশেষ খবর