বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা
রাজশাহী-চট্টগ্রাম

পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে শিবিরের সংঘর্ষ

প্রতিদিন ডেস্ক

রাজশাহীতে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের আর চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয় শিবিরের সঙ্গে। এ-সংক্রান্ত নিজস্ব প্রতিবেদক রাজশাহী ও চট্টগ্রামের পাঠানো রিপোর্ট— রাজশাহী : রাজশাহী মহানগরীতে জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামীর গায়েবানা জানাজার চেষ্টা করেছেন জামায়াত-শিবির কর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবির কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশকে লক্ষ্য করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ পাঁচ শিবির কর্মীকে আটক করেছে। গতকাল দুপুরে নগরীর কাদিরগঞ্জে এ ঘটনা ঘটে। রাজশাহীর বোয়ালিয়া জোনের সহকারী কমিশনার ইবনে গোলাম সাকলায়েন জানান, দুপুরে জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা নগরীর কাদিরগঞ্জে গায়েবানা জানাজা করার জন্য জড়ো হন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌঁছালে নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে হামলাকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। পরে ধাওয়া দিয়ে পুলিশ পাঁচ শিবির কর্মীকে আটক করে। চট্টগ্রাম : নগরীর চকবাজার প্যারেড মাঠে মতিউর রহমান নিজামীর গায়েবানা জানাজাস্থলে প্রবেশ করে ফাঁকা গুলি ছোড়েন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা। চট্টগ্রাম কলেজ ও আশপাশ এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছেন জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা। কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে তারা ছাত্রলীগের ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেন। এ সময় জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা চট্টগ্রাম কলেজ হোস্টেলের গেট, প্যারেড মাঠের গেট, শিক্ষক ও পুলিশের চারটি মোটরসাইকেল, রাস্তায় চলাচলরত বিপুলসংখ্যক কার, সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা ভাঙচুর করেন। বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন এবং ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। পরে পুলিশ শটগানের সাত-আট রাউন্ড গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। চট্টগ্রাম কলেজের পূর্ব গেট দিয়ে প্যারেড মাঠে ঢুকে জামায়াতের-নেতা-কর্মীরা জানাজা শেষে মাঠের উত্তর দিক দিয়ে বেরিয়ে যান। এর আগে ছাত্রলীগের সঙ্গে জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গতকাল দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যেই গায়েবানা জানাজা সম্পন্ন করেন জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা। এদিকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে নিজামীর ফাঁসির পর প্যারেড মাঠে গায়েবানা জানাজার ঘোষণা দেয় জামায়াতে ইসলামী। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, নিজামীর গায়েবানা জানাজা ঠেকাতে প্যারেড মাঠের পূর্ব গেটে অবস্থান নেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। অন্যদিকে চকবাজারের গুলজার মোড় ও আশপাশের এলাকায় জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেন। দুপুর দেড়টার দিকে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা একত্রিত হয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে চট্টগ্রাম কলেজের পূর্ব গেট দিয়ে প্যারেড মাঠে ঢুকে পড়েন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা। মাঠে ঢুকে তারা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়েন। মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকে ‘হত্যাকাণ্ড’ আখ্যা দিয়েছেন জামায়াতের চট্টগ্রাম মহানগর আমির মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম। এর বদলা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় এই কর্মপরিষদ সদস্য। গতকাল নগরীর চকবাজার প্যারেড মাঠে নিজামীর গায়েবানা জানাজার আগে সমাবেশে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই নিজামীকে মিথ্যা অভিযোগে সরকার হত্যা করেছে। একে একে এই হত্যাকাণ্ডের বদলা নেওয়া হবে।’ তিনি জামায়াতের ডাকা হরতাল সফল করারও আহ্বান জানান।

সর্বশেষ খবর