বুধবার, ২৫ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা
বিভীষিকাময় ৭ বছর

আজও শুকায়নি আইলার ক্ষত

প্রতিদিন ডেস্ক

আজও শুকায়নি আইলার ক্ষত

আজ ভয়াল ২৫ মে। ২০০৯ সালের এই দিনে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে খুলনার উপকূলবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা মুহূর্তের মধ্যে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। উপকূলে প্রাণ হারায় ১০৯ জন। সেই থেকে দিনটি এই জনপদের  মানুষেরা  বিভীষিকাময় দিন হিসেবে স্মরণ করে আসছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খব

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা জানান, ২০০৯    

সালের এই দিনে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে খুলনার উপকূলীয় কয়রা অঞ্চলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৭টি পয়েন্ট ভেঙে গেলে তাত্ক্ষণিক গোটা কয়রা উপজেলা লোনা পানিতে তলিয়ে যায়। জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পায়নি মানুষজন, গবাদিপশু, গাছপালা, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, মত্স্য ঘের। একই সঙ্গে ৫৭ ব্যক্তি প্রাণ হারায়। আইলার ৭টি বছর পেরিয়ে গেলেও উপকূলীয় লাখ লাখ মানুষ তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সহায়সম্বলহীন স্বজনহারা মানুষ এই দিনটিকে আজও আতঙ্কের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করে। সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আইলায় কেবল গাবুরা ও পদ্মপুকুর, মুন্সীগঞ্জ ও আশাশুনির প্রতাপনগরে মারা যায় ৭৩ জন নারী-পুরুষ ও শিশু। আশ্রয়হীন ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয় নেয় সড়কের উঁচু স্থানে। আইলার আঘাতে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধগুলো নির্মাণ-সংস্কার হলেও তা ঝুঁকিমুক্ত নয়। আইলার জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ায় বহু চেষ্টার পর বাঁধ নির্মাণ হলেও তার স্থায়িত্ব এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। মূল বাঁধ বাঁধতে ব্যর্থ হয়ে রিং বাঁধ নিয়ে গ্রামে পানি ঢোকা বন্ধ করা গেলেও তা কতদিন টিকবে তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীবেষ্টিত দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা ও পদ্মপুকুরের সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন পোল্ডারে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে গাবুরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর সুরা, রড় গাবুরা, পাশ্বেমারি, নাপিতখালি, চকবারা। এ ছাড়া পদ্মপুকুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৭/১নং পোল্ডারের ১০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের কামালকাটি, ঝাপা, পাতাখালী, বন্যতলা ও খুঁটিকাটা গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে মারাত্মক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া দাতিনাখালী, ঘোলা, আটুলিয়া, চাকলা, দুর্গাবাটি,  জেলেখালী আশাশুনির প্রতাপনগর, শ্রীউলাসহ তিনটি উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে স্থান ভেদে প্রায় ৫ থেকে ৬০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধে ব্যাপক ভাঙন ও ফাটল রয়েছে।

আইলা বিধ্বস্ত উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ নিয়ে এলাকার মানুষের দাবি ছিল ‘পরিকল্পিত ও টেকসই বাঁধ চাই, জীবন-জীবিকা ও সম্পদের নিরাপত্তা চাই’। এলাকার মানুষ  জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অবস্থা বিবেচনা করে সর্বনিম্ন ২০ ফুট উঁচু, ১২০ ফুট তলা এবং ৩০ ফুট মাথা রেখে বাঁধ নির্মাণের তাগিদ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরিকল্পিত ও টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতি বছর ভাঙন ও প্লাবনের কবলে পড়ছে মানুষ। আইলা অথবা সিডোরের মতো আরও একটি দুর্যোগ আঘাত করলে গাবুরা, পদ্মপুকুর ও প্রতাপনগরের মানুষ ফের ভেসে যাবে এমন আশঙ্কা এই তিনটি দ্বীপ ও দ্বীপ সদৃশ ইউনিয়নের সব মানুষের।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর