মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা
কেমন বাজেট চাই

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে লোকসান বন্ধে দিকনির্দেশনা চাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে লোকসান বন্ধে দিকনির্দেশনা চাই

মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম

২০১৬-১৭ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, আর্থিক ও উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকসান বন্ধে একটি সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা থাকা দরকার বলে মনে করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক খাতের সমস্যা দূরীকরণে বাজেটে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তাই দেখতে চান বিগত ওয়ান-ইলেভেন সরকার আমলে দুটি বাজেট ঘোষণায় অভিজ্ঞ এই অর্থনীতিবিদ। তার মতে, দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে অবাস্তব কোনো পদক্ষেপ নয়, বরং বাস্তবমুখী বাজেট হওয়া উচিত। নতুন অর্থবছরের বাজেট সামনে রেখে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম আরও বলেন, নতুন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তার দিকটি অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো উচিত। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে টাকার আনুপাতিক হার বাড়াতে হবে। এটা বাজেটের আনুপাতিক হারে বাড়াতে হবে। ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা সরকারের নতুন বাজেটের ঘাটতি অর্থায়ন মোকাবিলায় পাইপলাইনে থাকা ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈদেশিক সাহায্য ব্যবহার করা দরকার বলে মনে করেন সাবেক এই আমলা। দেশের অর্থনীতির বাস্তবতার সঙ্গে বাজেটের সম্পর্ক ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে, এমন দাবি করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন—বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. আজিজুল ইসলাম বলেন, বাজেটে শুধু অর্থ বরাদ্দ দিলেই হবে না, এ অর্থ ঠিকমতো খরচ হচ্ছে কিনা, তাও সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। দুই মেয়াদের ক্ষমতাসীন এ সরকারের আমলে বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরেই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি—এডিপি বাস্তবায়নের হার সবচেয়ে কম। তার মতে, শুধু উচ্চাভিলাষী আর অসম্ভব বাজেট লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। বাস্তবায়নের জন্য বাস্তবসম্মত বাজেট দিতে হবে। আমাদের দেশে প্রকল্প বা বাজেট প্রণয়ন যত সুষ্ঠুই হোক না কেন, বাস্তবায়ন নিয়ে তৈরি হয় সমস্যা।

ঢাকা-চট্টগ্রাম বা ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেনের দিকে তাকালেই তা বোঝা যাবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পরিবেশের কথাও ভাবতে হবে। বিশেষত জ্বালানি খাতে বিনিযোগের ক্ষেত্রে। রামপাল বা বাঁশখালী থেকে সেই অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে। ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলামের দাবি— ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নয়। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্যাংকিং খাতে দুরবস্থা, সার্বিকভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যের গতিহীনতা ইত্যাদি। এর সঙ্গে আগামী অর্থবছরে বিনিয়োগ বাড়ানো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে সবার আগে অবকাঠামো দুর্বলতা দূর করতে হবে। দ্বিতীয়ত, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিবেশ বিনিয়োগবান্ধব করতে হবে। আগামীতে সহিংস ও অসহিষ্ণু রাজনীতি থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। রাজস্বের প্রবৃদ্ধি কমছে।

সর্বশেষ খবর