শনিবার, ১১ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

পাহাড়ে পাখির দ্বিতল বাড়ি

রাঙামাটি প্রতিনিধি

পাহাড়ে পাখির দ্বিতল বাড়ি

পাহাড়ে গাছে গাছে পাখিদের দ্বিতল বাড়ি তৈরি করে দিয়েছে বিজিবি। আর এ বাড়ির নাম রাখা হয় টুনির বাড়ি। তাই পাখিরাও মহা খুশি। টুনির বাড়িতে শুধু টুনটুনি পাখি নয়, আনাগোনা রয়েছে  শালিক, চড়ই, ময়না, বুলবুলি, টিয়াসহ বিভিন্ন নামের পাখির। ঝাঁকে ঝাঁকে দল  বেঁধে আসে সবাই । সন্ধ্যা নামলে টুনির বাড়িতে ভিড় জমায় পাখির দল। তাদের কলতান আর কিচিরমিচির শব্দে অন্য রকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পাখির কলতানে মনোমুগ্ধকর প্রকৃতি একাকার হয়ে মিশে যায়। জানা গেছে, সম্প্রতি রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জোনের উদ্যোগে পর্যটন স্পট জুম রেস্তোরাঁর পাশে গাছে টুনির বাড়ি তৈরি করা হয়। আধুনিক ডিজাইনের রঙিন দ্বি-তলা একটি বাড়িতে সাধারণত চার জোড়া  পাখি থাকতে পারে। নিরাপদ আবাসস্থান হিসেবে অনেক পাখি আশ্রয় নিয়েছে টুনি বাড়িতে। তথ্য সূত্রে জানা গেছে, এককালে বনজ সম্পদে ভরপুর ছিল রাঙামাটি। এখন প্রায় পাহাড় ন্যাড়া।  সবুজঘেরা পাহাড়ি বন-বনানি বর্তমানে বৃক্ষশূন্য হয়েছে। ফলে রাঙামাটির ঐতিহ্যমণ্ডিত বিশাল ও সমৃদ্ধ বনজ সম্পদের ভাণ্ডার এখন জীর্ণদশার দ্বারপ্রান্তে। বিস্তৃত বনাঞ্চলে একসময় বন্য প্রাণী ও পাখির দ্বিতীয় বৃহত্তর আধার হিসেবে বিবেচনা করা হতো রাঙামাটিকে। ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির পাখির জন্য সমৃদ্ধ ছিল এ পাহাড়ি অঞ্চল। প্রায় ১০০ প্রজাতির পাখির অবস্থান ছিল। কিন্তু কালের পরিবর্তনসহ অপরিকল্পিত জুম চাষ ও নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের ফলে পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল ক্রমশ ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে পাখির সংখ্য দ্রুত হ্রাস পায়। তাই পাখি সংরক্ষণ ও নিরাপদ অভয়াশ্রম গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাপ্তাইয়ের ওয়াগ্গা বিজিবি জোন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করে। কাপ্তাই জোনের ১৯ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল সোহেল উদ্দিন পাঠান জানান, পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য ও পাখি সংরক্ষণের জন্য এ টুনির বাড়ি তৈরি করা। এতে ঝড় বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাবে পাখির ডিম ও বাচ্চা। সাধারণত দেখা যায় অনেক পাখি বিশেষ করে ময়না, চড়ই ও বুলবুলি মানুষের ঘরের কুঠরিতে বাসা তৈরি করে। আবার বিভিন্ন কারণে পাখিগুলো আশ্রয়হীন হয়ে যায়। সে চিন্তা মাথায় রেখে এ উদ্যোগ। গাছে গাছে পাখিদের  জন্য কয়েকটি বাড়ি তৈরি করে দিলে যেমনি পাখিরা নিরাপদ থাকবে তেমনি পর্যটকদের আকর্ষণ কাড়বে। ভবিষ্যতে আরও পাখির বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর