রবিবার, ১২ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা
সুনীল গমেজ হত্যা

ছয় দিনেও পাওয়া যায়নি ক্লু

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়ায় খ্রিস্টান ব্যবসায়ী সুনীল দানিয়েল গমেজ হত্যার ছয় দিনেও ক্লু পাওয়া যায়নি। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস হত্যার দায় স্বীকার করলেও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী একাধিক সংস্থা কাজ করলেও কোনো ক্লু পায়নি। পরিবারের লোকজন হত্যার কারণ জানতে উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। সুনীল গমেজ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির ওসি আবদুল হাই জানান, এখনো বলার মতো কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে। সরেজমিন বনপাড়ার খ্রিস্টান পল্লীতে গতকাল গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় এক সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে। বাড়ির সামনে পুলিশি পাহারা বসানো হয়েছে। সুনীল গমেজ হত্যার পর থেকেই স্ত্রী যোসেন্তা গমেজ তাদের মেয়ে স্বপ্না গমেজের বাড়িতে থাকছেন। সেই বাড়িতে সুনীল গমেজ হত্যা মামলার বাদী স্বপ্না গমেজ এবং বাহরাইন থেকে আসা তার স্বামী অতুল গমেজ ও যোসেন্তা গমেজের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাউকেই তারা সন্দেহ করছেন না। এমনকি পুলিশ যাকে আটক করেছে সেই সবুজও তাদের সন্দেহের তালিকায় নেই। তারা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষী ব্যক্তির শাস্তি দাবি করেন। এদিকে আটক সুনীল গমেজের ভাড়াটে আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে সবুজকে প্রথম দফায় দুই দিনের রিমান্ডে কোনো তথ্য না পেয়ে দ্বিতীয় দফায় তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত তার কাছ থেকে হত্যার ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আটক সবুজের পরিবার কদমচিলান নতুনবাজারে তার মুক্তির দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে বলা হয়, সবুজ কোনোভাবেই এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন না। এর পরও তদন্তে প্রমাণিত হলে তার দৃষ্টান্তমূলক সাজা হোক। তবে সবুজ নিরপরাধ হলে তাকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান এলাকাবাসী। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কদমচিলান ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সেলিম রেজা মাস্টার, সবুজের বড় ভাই আনোয়ার হোসেন মিঠু ও আফজাল হোসেন বাবু, স্থানীয় কলেজ শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান শামিম, সাবেক মেম্বার হাবিবুর রহমান এবং প্রতিবেশী আবদুল শাহ ও আবদুল জলিল। এ ছাড়া স্থানীয় মেম্বার জোসনা বেগম উপস্থিত ছিলেন।

নিহত সুনীল গমেজের বাড়িতে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী : নাটোরের বড়াইগ্রামে নিহত সুনীল গমেজের বাড়িতে গিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার। এ সময় তিনি বলেন, ‘এ হত্যার বিচার হবেই হবে। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং সুনীল গমেজ হত্যার বিষয়ে নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন। আমি নিহত সুনীল গমেজের পরিবারের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সমবেদনা পৌঁছে দিতে এসেছি। আপনারা কেউ ভয় পাবেন না। এই সরকার আপনাদের সঙ্গে আগেও ছিল এখনো আছে।’ শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মন্ত্রী বড়াইগ্রামের বনপাড়া খ্রিস্টান পল্লীতে সুনীল গমেজ হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং তার বাড়িতে যান। এ সময় তিনি নিহতের স্ত্রী জাসিন্তা রিবেরু ও মেয়ে স্বপ্না গমেজসহ স্বজনদের সান্ত্বনা দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাটোরের পুলিশ সুপার শ্যামল মুখার্জি, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত সেন দীপু, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য মিলনকান্তি দত্ত, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্মল রোজারিও, বড়াইগ্রামের ইউএনও মো. রুহুল আমিন, ওসি মো. মনিরুল ইসলাম, স্থানীয় খ্রিস্টান পল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার বিকাশ হিউবার্ট রিবেরু ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর